ডেস্ক নিউজ
ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন করোনার হটস্পট। এখনো প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু। সীমান্তবর্তী এ জেলায় শনাক্ত হয়েছে করোনার ভারতীয় ধরণও। এ কারণে এ জেলায় দেয়া হয়েছে এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন।
কিন্তু নানা কৌশলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মানুষ রাজশাহী হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সারাদেশেই করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় রাজশাহী জেলাতেও বিশেষ লকডাউন দেয়ার দাবি উঠেছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সভায় এ দাবি তোলা হয়।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। সভায় রাজশাহী-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাসহ পুলিশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা সভায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। যাদের অনেকেই লকডাউনের পক্ষ মত দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জর পার্শবর্তী জেলা ও সেখানকার ভয়ানক পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজশাহীতেও কঠোর লকডাউন দেয়ার পক্ষে মত দেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। বলেন, ফিডার রোড দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মানুষের রাজশাহী আসা বন্ধ করতে হবে। এ জন্য পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। কারণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মানুষ ভয়ে পালিয়ে রাজশাহী চলে আসছে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি রাজশাহীকেও কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা যায়।
পরিস্থিতির অবনতি হলে রাজশাহীতেও লকডাউন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে বিশেষ লকডাউন করা হবে কিনা সেটি এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তবে আপাতত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যেন কোন মানুষ রাজশাহীতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়টি কঠোর ভাবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির অবনতি শুরু হলে গত ২২ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভায় জেলাটিকে লকডাউনের প্রস্তাব আসে। এই প্রস্তাব হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়। এর এক সপ্তাহ পর সোমবার থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগির মৃত্যু হয়। করোনায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুইজনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। আর অপরজন রাজশাহীর। হাসপাতালের আইসিইউসহ করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৬২ জন রোগী। এদের মধ্যে আইউসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন।
এছাড়াও বুধবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫ জন ও রাজশাহী ১০ জন। বাকি পাঁচজন নওগাঁ ও নাটোরের।
এদিকে, বুধবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মঙ্গলবার বিভাগের আট জেলায় ২৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫৯ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী ৩৯ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে শনাক্তের হার ৬২ শতাংশ ও রাজশাহীতে ৪৮ শতাংশ। এছাড়াও বগুড়ার ২৬, নওগাঁর চার, নাটোরের নয়, জয়পুরহাটের ১০, সিরাজগঞ্জের আট ও পাবনার ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।