স্টাফ রিপোর্টারঃ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সারা বিশ্বের অনগ্রসর জনপদের ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির দাবীতে সোচ্চার জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্ব মানবতার কন্ঠস্বর। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে করোনা মহামারী প্রতিরোধে অনগ্রসর এশিয়া ও আফ্রিকার জন্যে করোনা ভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ শনিবার সকাল দশটায় সিংড়া কোর্ট মাঠে স্থাপিত মুক্ত মে আয়োজিত উপজেলার আড়াই হাজার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। একই মে প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে জনস্বাস্থ্য বিভাগের ‘সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ’ প্রকল্পের আওতায় ৩০টি সাব-মার্সিবল পাম্প, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত পাঁচটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অনুক‚লে অনুদানের চেক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ১২টি হুইল চেয়ার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের অর্থায়নে উপজেলার ৬০ জন কিন্ডার গার্টেন শিক্ষকদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ এবং শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে পাঁচ হাজার গাছের চারা বিতরণ করেন।
সিংড়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সঞ্জয় কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম সামিরুল ইসলাম, সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শেখ মোঃ ওহিদুর রহমান এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রæপের প্রেসিডেন্ট জর্জ লিন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আজ ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলাতে ২৬ মিনিটের ভাষণে করোনা ভাইরাসের টিকাকে একটি দেশ বা প্রতিষ্ঠানের নয় উল্লেখ করেপ টিকাকে সার্বজনীন করার দাবীতে সোচ্চার হন। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে একই দিনে একই স্থানে অর্থাৎ জাতিসংঘে বিশ্বের নিপিড়িত মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে বৈষম্যমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে সারা বিশ্বের সকল দেশ ও মানুষের জন্যে প্রযুক্তির ন্যায্য হিস্যার দাবী উত্থাপন করেছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। করোনা সংক্রমণের দীর্ঘ সংকটকালে ডিটিজাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলেই দেশের কোন কার্যক্রম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো থেমে থাকেনি। বাড়িতে বসে দেশের সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থীর ৭০ শতাংশ অনলাইনে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা করেছেন। ১১ হাজার সরকারি দপ্তরের এক লক্ষাধিক কর্মকর্তা অনলাইনে ই-নথির মাধ্যমে জনসাধারণের কাজ করে গেছেন। দেশের দুই সহ¯্রাধিক আদালতে ভার্চুয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করে দেড় লক্ষাধিক মামলার শুনানী হওয়ার ফলে মামলার জট তৈরী হয়নি। সম্প্রতি অনলাইনে কোরবানীর পশুর হাট পরিচালনা করে দুই হাজার কোটি টাকায় পার লক্ষাধিক পশু কেনাবেচা হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ‘৩৩৩’ নম্বরের মাধ্যমে সহযোগিতা প্রত্যাশী দেশের অসহায় লক্ষ মানুষকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ‘৯৯৯’ ২০১২ সাল থেকে দেশের মানুষের নাগরিক সেবা প্রাপ্তির মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২০ এবং ২০২১ সাল আমাদের জাতীয় জীবনে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে তিনটি কারনে। প্রথমত কৃতজ্ঞ জাতি শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে। দ্বিতীয়ত অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের কাংখিত গন্তব্যে বেগবান পথচলায় আমরা উদযাপন করছি স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী। এবং তৃতীয়ত বঙ্গবন্ধুর সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’র আধুনিক রুপ প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছতে আমরা সফলতা লাভ করেছি।
দেশ ও মানুষের কল্যাণে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে পলক আরো বলেন, তাঁর কর্মদক্ষতা ও দূরদর্শীর কারনেই বিশ্বের করোনা মহামারীর সংকটে মাত্র পাঁচটি উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। সারা বিশ্বের নন্দিত সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সর্বশেষ এসডিজি এওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় দেশ ২০৪১ সালে পৌঁছে যাবে বিশ্বের উন্নত দেশের কাতার।