নাটোরের বড়াইগ্রামে যৌতুকের দাবি পূরণ না করায় স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাটরা গোপালপুর গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে পুলিশ কনস্টবল মনিরুল ইসলাম শ্বশুরবাড়ি একই উপজেলার জোয়াড়ি গ্রামে বেড়াতে এসে তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী তাসলি খাতুন (১৮)কে শারিরীক নির্যাতন ও পরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায়। ৫২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ দুপুরে তাসলির মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
তাসলি জোয়াড়ি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৪ মাস আগে পুলিশ কনস্টবল মনিরুলের সাথে বিয়ে হয় তাসলির। বিয়ের পর তাসলির শ্বশুরবাড়ির লোকজন ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে টাকা গোপনে শ্বাশুড়ির কাছে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু এই টাকা দিতে অস্বীকার করে তাসলির পরিবার। তাসলির স্বামী মনিরুল ইসলাম বর্তমানে চাপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইনে কর্মরত আছেন। বিয়ের ৩ মাস পর স্বামী মনিরুলের সাথে তাসলি চাপাইনবাবগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন। কিন্তু যৌতুকের টাকা আদায়ের জন্য মনিরুলের চাচাতো ভাই শাহাদৎ হোসেনের প্ররোচনায় তাসলিকে তার বাবা বাড়ি জোয়াড়ি গ্রামে পাঠিয়ে দেয় মনিরুল। গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে মনিরুল শ্বশুরবাড়িতে এসে তাসলিকে টাকা দিতে বলে। এতে বাক-বিতন্ডা শুরু হলে তাসলিকে মারধোর করে ও পরে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায় সে। তাসলি মারা গেছে এই ভেবে মনিরুল জানালা ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাসলিকে উদ্ধার করে প্রথমে বনপাড়ায় একটি বেসরকারী হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে গলায় অপারেশন করার পর শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।এ ব্যাপারে তাসলির স্বামী পুলিশ কনস্টবল মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি শুনেছি আমার স্ত্রী মারা গেছেন। তবে আমার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সঠিক নয়। নাটোরে সহকারী পুলিশ সুপার ফাতেমা-তুজ-জোহরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।