ডেস্ক নিউজ
ভারতীয় এলওসিভুক্ত (লাইন অব ক্রেডিট) প্রকল্পে মোট ঋণ ছাড় হয়েছে ৯৬ কোটি মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার সমান ৮৬ টাকা ধরলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায়, প্রায় ৮ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। তিনটা এলওসি মিলে এই ঋণ ছাড় করেছে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ ভারত।
শুরুর দিকে ভারতীয় ঋণের অর্থছাড়ের পরিমাণ হতাশাজনক থাকলেও বর্তমানে তা বেড়েছে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। প্রথম ধাপে ২০১০ সালে দেওয়া এলওসি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি ডলার।
এরই মধ্যে ভারত প্রকল্পের আওতায় অর্থছাড় করেছে ৬৮ দশমিক ৬ কোটি ডলার বা ৭৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। প্রথম এলওসিতে অর্থছাড় বাকি আছে মাত্র ১২ কোটি ডলার। প্রথম এলওসির আওতায় ১৫টি প্রকল্প নেওয়া হয়। এরই মধ্যে ১২ প্রকল্প শেষ হয়েছে। বাকি তিন প্রকল্প চলমান। ২০২১-২২ অর্থবছরে একটি প্রকল্প বাদে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
এদিকে দ্বিতীয় এলওসি ২০০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি সই করেছে ভারত। এর মধ্যে অর্থছাড় হয়েছে ১৭ দশমিক ২৬ কোটি ডলার। ভারতের সাবেক অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রয়াত অরুণ জেটলির সফরে তৃতীয় ধাপের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় আরও ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি সই হয়েছিলো। এর মধ্যে অর্থছাড় হয়েছে ১০ দশমিক ১৩ কোটি ডলার। তিন ধাপে ভারতীয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা (এক ডলার সমান ৮০ টাকা ধরে)। এর মধ্যে ছাড় হয়েছে ৯৬ কোটি ডলার।
এলওসি ঋণের অর্থছাড়সহ প্রকল্প বাস্তবায়ন বৃদ্ধিতে রোববার (২৭ মার্চ) নগরীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, ভারতীয় হাইকমিশনসহ ইআরডি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে ইআরডি’র উপ-সচিব মুহাম্মদ রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, করোনাসহ নানা কারণে এলওসি ঋণ ছাড় বিলম্ব হয়েছে। তবে বর্তমানে সব কিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। সামনে আরও বাড়বে ঋণ ছাড়ের গতি।
ইআরডি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ঋণে মোট ১৫টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দুটি প্রকল্প শেষ হয়েছে। চলমান আছে ১৩টি প্রকল্প। চলতি সময় থেকেই দ্বিতীয় ঋণে অর্থছাড় বাড়ছে। এছাড়া তৃতীয় ঋণের আওতায় মোট ১৬টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুমোদন দিয়েছে। সামনে কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে টেন্ডার হবে।
সূত্র জানায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে ভারতের নমনীয় ঋণের ছাড় হয়েছিল মাত্র ১ দশমিক ২৯ কোটি ডলার। বর্তমানে যা কয়েকগুণ বেড়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঋণ দিচ্ছে ভারত।
প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় ঋণে অর্থছাড়ের পরিমাণ বেড়েছে মূলত প্রথম এলওসির আওতায়। এদিকে দ্বিতীয় এলওসির অর্থছাড় শুরু হয়েছে। তৃতীয় এলওসির আওতায় ঋণ ছাড় বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের পরিচালকরা ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) যত দ্রুত প্রস্তুত করবেন, এছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যত দ্রুত প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে তত দ্রুত ঋণ ছাড় বাড়বে।