ডেস্ক নিউজ
আগামী ৩১ মার্চ দেশে ৫জি সেবা বাণিজ্যিকভাবে শুরু হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ ২ হাজার ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে। ২০০০ সালে বাংলাদেশ মাত্র সাড়ে ৭ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করত। বাংলাদেশ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে এ ব্যান্ডউইথ ভারত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি ব্যান্ডউইথ কিনতে বিভিন্ন চেষ্টা করছে সৌদি আরব। শনিবার রাজধানীর মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে উদ্যোক্তা মহাসম্মেলনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি স্কুল-কলেজে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হবে। এরপর প্রতিটি গ্রামে এবং বাড়িতে বাড়িতে ইন্টারনেটের সংযোগ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে দেশের ৬৪টি জেলা ও ৫০টি দেশের ৬ লাখ তরুণদের নিয়ে টানা ৯০ দিনব্যাপী ১৪টি স্কিলসসহ ১৭টি ব্যাচে ১ হাজার ৫৩১ দিন ধরে অনলাইনে উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়। চাকরির পেছনে না ছুটে তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের তরুণ ও কর্মক্ষম মানুষ রয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। এ বিশাল জনগোষ্ঠী আইটি প্রশিক্ষণ নিয়ে যদি উদ্যোক্তা হতে পারে তাহলে দেশে কোন বেকার থাকবে না। এজন্য তরুণদের কারিগরিভাবে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কারিগরি দক্ষতা অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সুযোগ ও পরিবেশ পেলে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম। আমরা সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযুক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণ করছি। প্রযুক্তির এই মহাসড়ক ব্যবহারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারী বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন ও সামাজিক সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শিল্প, বাণিজ্য এবং শিক্ষাসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের জীবন-যাপন এখন ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ডিজিটাল সংযুক্তি ও যথাযথ ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে আমরা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও দেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এমনকি বাড়ি বাড়ি উচ্চগতির ইন্টারনেট আমরা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। তিনি ডিজিটাল জাতি গঠনে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ডিজিটাল দক্ষতা না থাকলে আগামীর দুনিয়ায় বসবাস করা যাবে না। তিনি নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের সোনার মানুষ আখ্যায়িত করে বলেন, আমাদের ছেলেরা মাত্র তিন মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছে। মোস্তাফা জব্বার তরুণদের উদ্দেশে বলেন, আমরা যুদ্ধ করে তোমাদের জন্য যে বাংলাদেশ তৈরি করেছি তোমাদের উচিত সেই দেশটাকেই তোমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়া।
অনুষ্ঠানে নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল বাহার জাহিদ উদ্যোক্তা তৈরিতে সংগঠনের কর্মকা- মন্ত্রীকে অবহিত করেন। অনুষ্ঠানে আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে কয়েক উদ্যোক্তা তাদের উঠে আসার কাহিনী তুলে ধরেন। একজন উদ্যোক্তা তার উদ্যোক্তা হওয়ার কাহিনী তুলে ধরে বলেন, তার দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া সত্ত্বেও যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন। কয়েক জন নারী উদ্যোক্তা অনুরূপ অনুভূতি ব্যক্ত করেন।