ডেস্ক নিউজ
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবারও ছায়ানট ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছে। পুরনো ও নতুন পরিবেশনার মিশ্রণে সঙ্কলিত অনুষ্ঠানটি আজ (১ বৈশাখ, ১৪ এপ্রিল) সকাল ৭টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়।
সেখানে ছিল ছায়ানটের সভাপতি সন্জীদা খাতুনের কথন। তিনি বলেন, এ বছর, আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার অর্ধশতবর্ষ পূর্ণ করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে, নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আপনারা ছায়ানটের প্রীতি ও ভালোবাসা গ্রহণ করুন।
১৯৬৭ সাল থেকে নগরজীবনে নববর্ষকে আহ্বান জানানোর জন্য ছায়ানট রমনার বটমূলে যে সুর ও বাণীর আয়োজন করে আসছে, তাতে প্রথম ছেদ পড়ে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে। এরপর গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে। সংক্রমণের প্রকোপে এ বছরও তা আয়োজিত হচ্ছে অনলাইনে, অর্থাৎ সীমিত পরিসরে।
করোনার কারণে বাংলা বছরের প্রথম দিনে নেই উৎসবের আমেজ। স্বজন হারানোর বেদনা আর সংক্রমণের শঙ্কা আজ সর্বজনের অন্তরে। তবে পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে নিছক নববর্ষ উদযাপন নয়। আত্মপরিচয়ের সন্ধানে বাঙালি যে পথপরিক্রমায় অংশ নিয়েছে, সে পথ মসৃণ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল, নববর্ষের আয়োজন সর্বধর্মের বাঙালিকে ঐক্যসূত্রে যুক্ত করে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা কথনে বলেন, ‘লক্ষ প্রাণের আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। অর্ধশতবর্ষ পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে ওঠা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি আমাদের আশাবাদী করে তোলে। কিন্তু ধর্মের মর্মবাণীকে উপেক্ষা করে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্মবিদ্বেষ সম্প্রীতির সমাজকে বিনষ্ট করতে সচেষ্ট। লোভের বিস্তার বৈষম্য সৃষ্টি করছে। খণ্ডবিচ্ছিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটছে সামাজিক অবক্ষয়ের। দেশের অগ্রযাত্রাকে অক্ষুণ্ন রেখে নেতিবাচক প্রবণতাকে রোধ করবার জন্যে অতীতের মতো বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার প্রসার, মানবিক সমাজ গঠনের এক অবলম্বন হয়ে উঠতে পারে।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, অন্ধকারের উৎস থেকে আলো উৎসারিত হবে। নতুন বছর বয়ে আনবে সর্বজনের জন্য মঙ্গলবার্তা। আলো আসবেই।’