ডেস্ক নিউজ
আগামী অর্থবছরে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে দুই লাখ কোটি টাকারও বেশি। চলতি অর্থবছরে এই দুই খাত থেকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেয়া রয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আগামী অর্থবছরে এই দুই খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়বে ১২ শতাংশ।
জানা গেছে, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব প্রাপ্তির পরিমাণ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব প্রাপ্তির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটে রাজস্ব আয় বাড়ছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা বাড়লেও জিডিপির অংশ হিসেবে রাজস্ব আয় বছরের ব্যবধানে কমছে ১ ভাগ। বরাবরের মতো এবারও ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করতে চায় সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নতুন বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ৮.৪%)। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এনবিআরের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ৯.৫%)। সে হিসাবে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। শতকরা হিসাবে বাড়ছে ১২ শতাংশ।
এনবিআরের আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের উপখাতগুলোর মধ্যেÑ আয়কর খাতে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা; শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা; মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক খাতে ২ লাখ ৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৫ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং কর-বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এ দুই খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা ও ৪৩ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ১৩ শতাংশ ও ৫ শতাংশ।
জানা যায়, আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। নতুন বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫.৫৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সার্বিক ঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সে হিসাবে ঘাটতি কমছে। কিন্তু জিডিপির তুলনায় ঘাটতি কমলেও টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ছে ৩০ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে আগামী অর্থবছরে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হবে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে নেয়া হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকা।