এ বছর ২১০ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় দুই গুণ।
রাঙ্গামাটির আবহাওয়া মাল্টা চাষের অনুকূল। পাহাড়ি মাটিতে মাল্টা গাছ বেশ বড় হয়। ফলনও দেয় ভালো। ফলের ভারে নুয়ে পড়ে ডাল। এই মাল্টা পাকলেও সবুজ থাকে। তবে বেশ রসালো ও মিষ্টি। চাহিদা বেশি, দামও ভালো। চাষিরা তাই মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন।
রাঙ্গামাটি সদর, কাপ্তাই, নানিয়ারচর, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল উপজেলাতেও পাহাড়ে গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা। চলতি বছর এ জেলার মোট ২১০ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মাল্টার ফলন বেড়েছে দুই গুণ। আর সবচেয়ে বেশি লাভ হচ্ছে মাল্টা-১ চাষে। এই মাল্টা পাকলেও সবুজ থাকে।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ জানিয়েছে, রাঙ্গামাটির মাল্টা মিষ্টি ও সুস্বাদু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এই মাল্টা এখন সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। পাশাপাশি মাল্টা গাছের ডাল কলম করে চারা বিক্রি করেও চাষিরা বাড়তি আয় করেন।
কয়েক বছর ধরেই মাল্টার আবাদ করছে সদর উপজেলার ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। এ বছর বারি মাল্টা-১ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। মাত্র ৪৫টি মাল্টা গাছ থেকে ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়েছে।
আগস্টে ৫ একর জমিতে রোপণ করেছে ২০০টি মাল্টা চারা। পাশাপাশি এ বছর বাউকুল, আপেলকুল, আম্রপালিসহ ড্রাগন ফলে বেশ সাফল্য পেয়েছে এই ফাউন্ডেশন।
হিল অ্যাগ্রিকালচার ক্রপ ইন্টেন্সিফিকেশন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) অর্থায়ন করছে। তা বাস্তবায়ন করেছে হাটহাজারী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
রাঙ্গামাটির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বনরূপা বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে হরেক রকম রসালো ও পাকা মাল্টা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মাল্টার দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্থা। সংস্থাটি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বোধীপুর বনবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ জিনবোধী মহাথেরো। সংস্থাটি কয়েক বছর ধরে ধর্মীয় ও সামাজিক কাজের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ফল চাষে সফলতা পেয়েছে।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পূর্ণচন্দ্র চাকমা জানান, অনন্যা বছরের তুলনায় এ বছর বারি মাল্টা-১ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর মাল্টা থেকে লাখ টাকার বেশি লাভ হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, রাঙ্গামাটিতে এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছরই মাল্টা চাষে কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন।