ডেস্ক নিউজ
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের কূটনীতিক দাবি করেন, ‘তার দেশ রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানানোর জন্য তৈরি কিন্তু বাংলাদেশের কিছু সংস্থা রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত যেতে দিচ্ছে না।’
থিডা আরও দাবি করেন, ‘২০১২ সালে কয়েকজন মুসলিম একজন আরাকান নারীকে ধর্ষণ করলে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। তারপর থেকে ওই অঞ্চলে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তিনটি পুলিশ চৌকি এবং ২০১৭ সালে ৩০টি পুলিশ চৌকিতে মুসলিম উগ্রবাদীরা আক্রমণ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।’
স্বপ্রনোদিত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যবাসন নিয়ে অনেক বেশি কথা হচ্ছে জানিয়ে ওই কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা দুইবার তাদের ফেরত যেতে বলেছি কিন্তু কেউ ফেরত আসেনি।’
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব চাইলে তাদেরকে জাতীয় ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) গ্রহণ করতে হবে বলে তিনি জানান।
এর জবাবে মাহবুব সালেহ বলেন, ‘মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য তৈরি সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং মূল বিষয় হচ্ছে রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার জন্য আত্মবিশ্বাসী কিনা। অর্থাৎ রোহিঙ্গারা বিষয়টি কিভাবে দেখছে। যদি তাদের বিশ্বাস থাকে ফেরত গেলে তারা নিরাপদে থাকবে, তাহলেই তারা ফেরত যাবে। গোটা পৃথিবী দেখেছে বাংলাদেশে অবস্থিত ১১ লাখ রোহিঙ্গার একজনও ফেরত যেতে রাজি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আমরা কোনও পণ্য বা সেবা নিয়ে আলোচনা করছি না বরং মানুষ নিয়ে আলোচনা করছি। মিয়ানমারসহ সবার এটি স্বীকার করে নেওয়া উচিত রোহিঙ্গারা মানুষ। আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদেরকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টের মাঝামাঝি মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং তাদের সমর্থনে বিভিন্ন উগ্র সম্প্রদায় এই ঘটনা ঘটনায়। প্রাণ বাঁচাতে ২৫ আগস্ট থেকে সোয়া সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে আসে আশ্রয়ের সন্ধানে। বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিলেও এর আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছিল প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। এরপর থেকেই বিশ্ব সম্প্রদায়কে পাশে নিয়ে এসব রোহিঙ্গাকে নিরাপদে তাদের দেশে ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে রাখাইনে সংঘটিত এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলছে এই মামলার বিচার।