ডেস্ক নিউজ
মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানের জন্য ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) শক্তিশালী হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশ। আর এ জন্য ওআইসির সংস্কারমূলক কাজ এগিয়ে নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সরকার।
গত সোমবার রিয়াদে ওআইসি সদর দফতরে সংস্থার মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের সাথে বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ মন্তব্য করেন। প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব গেছেন। বৈঠকে ওআইসির নিয়োগে সমভাবে ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্বের ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি ওআইসির সদস্যভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন। বৈঠকে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
শাহরিয়ার আলম কৃষিখাতে যৌথ প্রকল্প নেয়ার মাধ্যমে আফ্রিকার ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এ সব প্রকল্পে বাংলাদেশ দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তি জ্ঞান সরবরাহ করতে পারে। সুদান, উগান্ডাসহ আফ্রিকার অন্যান্য দেশের অনাবাদি উর্বর জমি এ ধরনের প্রকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ওআইসির অন্যান্য সমৃদ্ধশালী দেশগুলো অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে। প্রস্তাবিত কৃষি প্রকল্প থেকে ওআইসির সদস্য দেশগুলো পারস্পরিকভাবে উপকৃত হতে পারে বলে প্রতিমন্ত্রী মত দেন। ড. ওথাইমিন বাংলাদেশের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ওআইসির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
ওআইসি মহাসচিব স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ওআইসিভুক্ত অনেক দেশের জন্য উদাহরণ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে ওআইসির ভূমিকা জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। শাহরিয়ার আলম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিন পর্যবেক্ষণের জন্য গত মাসে বাংলাদেশে ওআইসির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান। প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতি রাজনৈতিক এবং মানবিক সমর্থন অব্যাহত রাখতে মহাসচিবকে অনুরোধ জানান।
প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ড. ওথাইমিন। এ সঙ্কট নিরসনে ওআইসির পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, জেদ্দার দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।