নিজস্ব প্রতিবেদক:
তানিয়া খাতুনের জন্ম দরিদ্র কৃষক পরিবারে। দুই ভাই-দুই বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। দারিদ্রকে জয় করে তানিয়া এবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় পটুয়াখালি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তিনি নাটোরের বাগাতিপাড়ার সদর ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে। একদিকে মফস্বল গ্রাম থেকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় পরিবারে যেমন বইছে আনন্দের বন্যা, অন্যদিকে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরিবারে দেখা দিয়েছে দুঃশ্চিন্তা। জানা গেছে, সামান্য জমিতে আবাদ করে কোন মতে সংসার চালান তানিয়ার বাবা আবু তালেব। স্বল্প আয়েই সন্তানদের পড়া-লেখা খরচ চালান তিনি। বড় দুই মেয়ে তানিয়া-তিশা এক সাথে পড়া-লেখা শুরু করে ছোট থেকেই ভাল ফলাফল করতো। সেই থেকে মেয়েদের লেখা-পড়ার প্রতি বাবার বিশেষ মনোযোগ বাড়ে। উপজেলার তমালতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে দু’জনেই জিপিএ ৫ পায়। এরপর নাটোর শহরের সরকারি রাণী ভবাণী মহিলা কলেজ থেকে তানিয়া জিপিএ ৫ এবং তিশা জিপিএ ৪ দশমিক ৬৭ অর্জন করে। তানিয়া মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে লড়ে যাচ্ছেন তিশা খাতুন। ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে তানিম তৃতীয় শ্রেণীর এবং তরিকুল স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। অজো-পাড়া গাঁ থেকে তানিয়ার এমন সাফল্যে গ্রামবাসিও খুশি। কিন্তু এতদিন খরচ চালিয়ে এলেও কৃষক আবু তালেব দুই মেয়ের আগামী দিনের খরচগুলো কিভাবে চালাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তানিয়ার ভর্তির টাকা জোগাড় করতে আয়ের সম্বল সামান্য জমিও লিজ দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও পুরোপুরি টাকা জোগাড় হয়নি। বাবা আবু তালেব জানান, তিশার খরচের পাশাপাশি তানিয়ার মেডিকেলের খরচ চালানোর সঙ্গতি তার নেই। স্কুল-কলেজে শিক্ষকরা দুই মেয়ের মেধার দিকে চেয়ে আর্থিক সংকটের কারনে প্রাইভেট পড়াতে কোন টাকা-পয়সা নিতেন না। মেধাবী তানিয়া বলেন, তার এ সাফল্যে তিনি মা-বাবা এবং মামা আব্দুস সালামের পর স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। মেডিকেলে ভর্তি হয়ে ভাল মানের চিকিৎসক হয়ে দরিদ্র মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে চান। মা মোমেনা বেগম বলেন, তিনি মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসহায় অনেকের পাশে দাঁড়াতে দেখেছেন। মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা পূরনে তার মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন