নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোর কোতয়ালি মডেল থানার সামনে প্রাচীরের মাত্র ২৫ গজের মধ্যে একটি সোনার দোকানে দিন দুপুরে দুঃসাহসিক চুরি সংঘঠিত হয়েছে। সংঘবদ্ধ চোরেরা অভিনব কৌশল নিয়ে দোকানের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে প্রায় ১শ ভরি সোনা চুরি করে নিয়ে গেছে বলে প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্স দোকানের মালিক অমিত রায় ওরফে আনন্দ দাবি করেছে। পুলিশের দাবি ৩০-৪০ ভরি সোনা চুরি হতে পারে। এ সময় চোরেদের ফেলে যাওয়া আলামত এবং দোকানের দুটি সিসি ক্যামেরা জব্দ করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ টা হতে ৪ টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটে বলে দোকান মালিক দাবি করেছেন।
জব্দকৃত ভিডিও ফুটেজের দৃশ্য দেখে পুলিশ জানিয়েছে, যশোর কোতয়ালি মডেল থানার উত্তর পূর্ব কোনায় চৌরাস্তা ও চুটিপট্টি মোড়স্থ প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে চুরি সংঘঠিত হয়েছে। ৭/৮জনের একদল সংঘবদ্ধ চোর সোনা চুরির কাজে অংশ নিয়েছে। বিকেল সাড়ে ৩ টার মতো বাজে। দোকানের সামনে এসে বসলো কয়েক যুবক। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সেখানে এসে জড়ো হলো আরো কয়েকজন। সবমিলিয়ে ৭/৮ জনের মতো। এদের একজনের হাতে ভাঁজ করা একটা বড় থ্রিপল। তারা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থ্রিপলের ভাঁজ খুলে দোকানের সামনের অংশটি আড়াল করে ফেললো। রাস্তা থেকে দেখলে মনে হবে যেন তারা থ্রিপলটি ভাজ করছে। এর মাঝেই তালা ভেঙ্গে সার্টার তুলে দোকানে ঢুকে পড়লো লাল গেঞ্জি ও মাথায় টুপি পরা এক যুবক। দোকানের ভিতরের সিসি ক্যামেরায় তখন বিকাল ৩ টা ৫২ মিনিট। দোকানে ঢুকেই মুখে পরে নিল মাস্ক। এরপর ১০ মিনিটের মধ্যেই দোকানের ভিতর থেকে বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেল সংঘবদ্ধ চোরের দলটি।
দোকানের মালিক অমিত রায় আনন্দ পুলিশ ও সাংবাদিকদের বলেন, বাড়ি পৌছানোর ১৫ মিনিটের মধ্য চুরির খবর পেয়ে তিনি ফিরে আসে। আমার দোকানে কোন কর্মচারী নেই। আমি নিজেই দোকান চালাই। কত সোনা চুরি হয়েছে হিসাব না করে কোন কিছু বলতে পারছি না, হয়তো ১শ ভরি হবে । সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সালাউদ্দিন সিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী, যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি (পুলিশ পরিদর্শক-তদন্ত) সমীর কুমার সরকারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এসময় শেখ সালাহ উদ্দিন সিকদার জানান, চোরদের ফেলে যাওয়া আলামত জব্দ করা হয়েছে। সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ৩০ থেকে ৪০ ভরি সোনা চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা হবে এবং আসামিদের আটকের জন্য অভিযান শুরু হয়েছে।
যশোর জেলা জুয়েলার্স মালিক সমিতির সভাপতি সঞ্জয় চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন, এ ঘটনা নিয়ে পঞ্চম বারের মত দুপুরে লুটের ঘটনা ঘটলো। পুলিশ দ্রুত সোনা উদ্ধার করতে না পারলে যশোরে সোনার ব্যবসা করা কঠিন হবে।
জুলেলার্স মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব ধর জানান, চুরির ঘটনা জানা মাত্রই আমরা সব জুয়েলার্স বন্ধ করে থানায় যাই। পুলিশ দ্রুত চুরিকৃত সোনা উদ্ধার এবং চোরদের আটকের আশ্বাস দিলে আমরা চলে আসি।