ডেস্ক নিউজ
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন-র্যাব ও এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকার সেখানে ল’ ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে যে চুক্তি করা হবে তা বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নিরাপত্তা বাহিনীর অনুদান পাওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লিহেই আইনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে আমরা দেশটির সঙ্গে চুক্তিতে সম্মতি হয়েছি। এই চুক্তির লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছি। চুক্তি খতিয়ে দেখছি। তিনি এও বলেন, এটাকে ঠিক চুক্তি বলা যাবে না। এটা একটি সম্মতিপত্র।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, চুক্তি অনুযায়ী আগামী দিনে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যে অনুদান দেবে তার হিসাব-নিকাশ দিতে হবে। তবে অতীতে ব্যয়ের জন্য সেই হিসাব প্রযোজ্য নয়। তিনি বলেন, আমরা এখন আমাদের উত্তরের ভাষা নিয়ে কাজ করছি। আমরা আমাদের সেফগার্ড বজায় রেখে তাদের জবাব দেব।
বাংলাদেশে কী কী বিষয়ে জোর দিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগাম কনসালটেশন, নির্ভরযোগ্য প্রমাণের সূত্র কী এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যথেষ্ট সুযোগ।
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আইনের বাধ্যবাধকতা বলবৎ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই আমাদের জবাব জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আমাদের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস খোঁজখবর নিচ্ছে। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের হয়তো কোনো ল’ ফার্ম নিয়োগ করার বিষয় থাকতে পারে।
তিনি বলেন, যদি তারা কোনো সংস্থার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে, তবে আগাম আলোচনা করতে চাই। নির্ভরযোগ্য প্রমাণ কী সে বিষয়ে জানতে চাইবে বাংলাদেশ এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ দিতে যথেষ্ট পরিমাণ সময় চাইবো বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে অনুদান দিয়ে থাকে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশও এই অনুদান পেয়ে আসছিল। এখন থেকে এই অনুদানের সব ধরনের তথ্য দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। একইসঙ্গে চুক্তিও করতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ১ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তির অনুরোধ করেছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও ১৫ দিন সময় চেয়েছে। সে অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিষয়টা নিয়ে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।