নিউজ ডেস্কঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলেও তা নিয়ে সরব হয়ে আবার থেমে গেছেন দলটির কর্তাব্যক্তিরা। জানা গেছে, প্রধান ৭টি এজেন্ডায় জামায়াতের সংস্কার ঝুলে আছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দলের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিকভাবে নতুন সংগঠন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু করলেও মত পার্থক্যের কারণে ৬ মাস পার হলেও নতুন সংগঠনের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। থেমে আছে এ সংক্রান্ত ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ কমিটির কার্যক্রমও।
জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, নতুন সংগঠনের সাংগঠনিক, আদর্শিক, অর্থনৈতিক উৎসসহ নানা বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ৫ সদস্যের কমিটি। বিশেষ করে নতুন সংগঠনটি কি জামায়াতের অঙ্গ হিসেবে থাকবে, নাকি আলাদা হবে- সে বিষয়েরও সুরাহা হয়নি।
এছাড়া দলের আদর্শ ধর্মভিত্তিক নাকি সেক্যুলার হবে, ইসলামিক এজেন্ডা থাকবে কিনা, গঠনতন্ত্রের ফরম্যাট কী হবে, নেতৃত্ব কারা দেবে, সংগঠনের অর্থনৈতিক কাঠামো কী হবে, যারা নতুন সংগঠনে যুক্ত হবেন তারা মূল দল জামায়াতের স্বপদে থাকবে কিনা, এসব প্রশ্নেরও কোনো উত্তর দিতে পারেননি জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বিশেষ কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রশিবিরের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, নতুন নামের প্রাসঙ্গিকতা কতটা এবং এই নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করলেও কতটা রাজনৈতিক ফল আসবে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে জামায়াতের যে অবস্থান, সেখান থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। সে ক্ষেত্রে নতুন নামে এলেও এ বিষয়টি থেকে কতটা নিস্তার পাওয়া যাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকবে জনগণের মাঝে। এসব বিষয় নিয়ে সংস্কার কমিটির কার্যক্রম থেমে আছে। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতি ও অগ্রগতি সাপেক্ষে এর কোনো ফলাফল আসবে বলে আমার মনে হয় না। বিষয়টি আর সামনের দিকে এগুবে না।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাবনা পাঠানো হয় বিবেচনার জন্য। এরপর শুরা সদস্যদের অভিমতের ভিত্তিতেই নতুন নামে সংগঠন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয় এবং ৫ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়।
যদিও এই কমিটি গঠনের বিষয়টি গোপন রাখার অভিযোগ এনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে অবস্থানকারী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জুকে। এই মঞ্জুর উদ্যোগে একটি রাজনৈতিক দল গঠনেরও প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।