বর্তমানে সারা দেশেই রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে । গত ১০ বছর আগেও এই সাপটি তেমন চোখে পরত না । মূলত ২০১২ সালের পর থেকে এই সাপের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। রাসেলস ভাইপার দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে ।
রাসেলস ভাইপার স্বভাবগতই কিছুটা তেজী । এটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সাথে সহজে মিশে যেতে পারে । মানুষ খেয়াল না করে সাপের খুব কাছে চলে যায়, ফলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে । এই সাপটির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূলত মানুষ হিসেবে আমরাই দায়ী । যেসকল প্রাণী রাসেলস ভাইপার খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে, প্রকৃতিতে এদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। কিছু সাপ যেমন, শঙ্খচূড় (King Cobra), খইয়া গোখরা (Binocled Cobra), কালাচ/ কেউটে (Common Krait), শঙ্খিনী (Banded Krait) রাসেলস ভাইপারসহ অন্যান্য সাপ খেয়ে থাকে । বেজি, গুইসাপ, বাগডাশ, গন্ধগোকুল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল এরাও রাসেলস ভাইপার খেয়ে থাকে। এছাড়া তিলা নাগ ঈগল (Crested Serpent Eagle), সারস (Stork), মদন টাক (Lesser Adjutant) রাসেলস ভাইপার খেতে পারে । বন্যপ্রাণী দেখলেই তা নিধন করার প্রবণতা, কারণে অকারণে বন্যপ্রাণী হত্যা, এদের আবাসস্থল ধ্বংস করা সহ বিভিন্ন কারণে দেশের সর্বত্রই এসকল শিকারি প্রাণী আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে, ফলে রাসেলস ভাইপার অত্যধিকহারে প্রকৃতিতে বেড়ে গেছে ।
রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে ।
- যথাসম্ভব সাপ এড়িয়ে চলুন, সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না । প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সাহায্য নিন বা নিকটতম বন বিভাগ অফিসে খবর দিন ।
- যেসব এলাকায় রাসেলস ভাইপার দেখা গিয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন ।
- রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন ।
- সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না । রোগীকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন । দংশিত স্থানের উপরে হালকা করে বেঁধে দিন ।
- রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান ।
- আতঙ্কিত হবেন না, রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টি ভেনম (Anti Venom) নিকটস্থ হাসপাতালেই পাওয়া যায়।
Bangladesh Forest Department