নিউজ ডেস্ক
গত বছরের চেয়ে এবার দেশে চায়ের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশে চা উৎপাদনের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে এবার সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে। চা উৎপাদনের ইতিহাসে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। কিন্তু তার পরের বছরেই উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৮০ লাখ কেজিতে। তবে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।
চা বাগান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে কীটনাশক ব্যবহার এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চা উৎপাদনে এই সফলতা এসেছে। মৌলভীবাজারের হামিদিয়া চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম জানান, পরিমিত বৃষ্টি, পরিমিত রোদ, পরিমিত আবহাওয়া—এগুলো সঠিকভাবে থাকলে উৎপাদন বাড়বেই।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. কে এম রফিকুল হক জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৮.৫৪% বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। আর নিকটতম অবস্থানে রয়েছে ভারত ৫.৭৬% আর এ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে তার ধারণা।
তিনি জানান, এ বছর এই সময়ে আনুপাতিক হারে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রে চায়ের উৎপাদন কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এর উৎপাদন আশার সঞ্চার করেছে। অধিক চা উৎপাদনকারী দেশ শ্রীলঙ্কা জুলাই পর্যন্ত গত বছরের তুলনায় বেড়েছে মাত্র ০.৯৫%, কেনিয়া কমেছে ৮.৩৮%।
চা বোর্ডের শ্রীমঙ্গল প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. কে এম রফিকুল হক আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২৩ ভাগ চা বেশি উৎপাদন হয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরের পর তা কমে আসবে। ইতিমধ্যে সারা বিশ্বের চায়ের জন্য সুখ্যাত দেশগুলোকে পেছনে ফেলে এ বছর জুলাই পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ২৮.৫৪% বেশি উৎপাদন হয়েছে। চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ, প্রত্যেক চা বাগানের পরিত্যক্ত জমিকে চা চাষের আওতায় আনয়ন, সমতলে পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটে ক্ষুদ্রায়তন চা চাষ বাড়ানো, চা গবেষণা কেন্দ্র শ্রীমঙ্গল কর্তৃক চায়ের রোগবালাই পোকামাকড় দমনে সঠিক পরামর্শ প্রদানসহ প্রভৃতি কর্মকাণ্ড মূল ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী জানান, শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয় এ বছর চায়ের গুণগত মানও ভালো হচ্ছে। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ৫৩ মিলিয়ন কেজি আর গত বছর এই সময়ে ছিল ৪২ মিলিয়ন কেজি।
বাংলাদেশ টি ট্রেডার্স অ্যান্ড প্লান্টারস অ্যাসোসিয়েশন এর সদস্য সচিব জহুর তরফদার জানান, উৎপাদিত এ চায়ের নিলাম এখন সরাসরি শ্রীমঙ্গলে হওয়াতে চায়ের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে না। চায়ের উৎপাদন ভালো হওয়ায় খুশি চা শ্রমিকরাও।