লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে শহীদুন্নবী জুয়েলকে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর দায়ে তিন মামলায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেফতার হলেন দশজন।
সোমবার (০২ নভেম্বর) সকালে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত কুমার মোহন্ত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে প্রথম দফায় পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার (০১ নভেম্বর) আদালতে নেয় পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে প্রথম দফায় গ্রেফতার পাঁচজনকে হত্যা মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন জানায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী।
প্রথম দফায় গ্রেফতাররা হলেন- ওই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক (২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী (৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)। এই ৫ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার দায়ে নিহতের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (৩১ অক্টোবর) একটি মামলা করেন। একই ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার দায়ে পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান আলী বাদী হয়ে এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুরের দায়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত। বহুল আলোচিত তিনটি মামলায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ তিন মামলায় দুই দফায় মসজিদের খাদেমসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার আবদুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
গতকাল রোববার ঘটনাস্থল তদন্ত করে মসজিদের কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির। এটা স্রেফ একটি গুজব বলে দাবি করা হয়েছে।