নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর শহরের চকরামপুরে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যবসায়ি ফরিদ আহমেদের উপর সন্ত্রাসী জুয়েলের হামলার তিন দিন অতিবাহিত হলেও কোন মোটিভ খুঁজে পাইনি পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে শহরের চকরামপুরে বায়তুন নূর জামে মসজিদে প্রতিদিনের মত নামাজ পড়তে আসেন ফরিদ আহমেদ । আসরের নামাজের দুই রাকাত নামাজ আদায়ও করেন তিনি। এসময় তার আত্নচিৎকারে স্থানীয় মুসল্লী সরদার আরিফুর রহমান পলাশ, আকতার মন্ডল বিডিআর ও আব্দুস সাত্তার এগিয়ে আসেন এবং তাকে উদ্ধার করেন।
সরদার আরিফুর রহমান পলাশ জানান, ফরিদ আহমেদ এলাকায় সৎ ও দানশীল ব্যবসায়ী হিসাবে দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করে আসছেন। শুক্রবার আসরের নামাজ আমরা একসাথেই পড়ছিলাম। আমাদের কাতারেই ছিলেন ফরিদ। তার পেছনের কাতারেই ছিল চকরামপুর মহল্লার মৃত আফাজ উদ্দিন মান্নাফের ছেলে সন্ত্রাসী জুয়েলও নামাজ পড়ছিল। প্রথম এক রাকাত শেষ হলে আমরা দ্বিতীয় রাকাতে সিজদায় যাওয়ার পরেই আমরা হঠাৎ ধুপধাপ শব্দ ও ফরিদ আহমেদের আত্নচিৎকারে নামাজ ছেড়ে দেই। পলাশ আরও জানায়, হাতুড়ি হাতে সেসময় দ্রুত মসজিদ থেকে জুয়েলকে পালিয়ে যেতে দেখি আমি।গুরুতর জখম হওয়া ফরিদ আহমেদকে আমরা দ্রুত আধুনিক সদর হাসপাতালের নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। মাথার তিন চারটি স্থানে গুরুতর জখম হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করার পরামর্শ প্রদান করেন। সন্ধ্যাই ফরিদ আহমেদের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয় ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদকে।
মসজিদের মুসল্লী আব্দুর সাত্তার বলেন, মসজিদের কমিটিতে ফরিদ আহমেদ হিসাবরক্ষক হিসাবে বেশ সফল ভাবে সুনামের সাথে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। তার উপর এমন হত্যাকান্ডের মত ঘটনাকে, আমরা কোন ভাবেই সাধারণ মাদকসেবীর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলতে পারি না। হাতুড়ি নিয়ে কেউ মসজিদে আসে না। অবশ্যই পরিকল্পিত ভাবেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, মসজিদের কমিটির মধ্যে কেউ জড়িত কিনা তাও নজরে আনা দরকার।
ভুক্তভোগী ফরিদ আহমেদের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার বাবা একজন সরল ও সৎ ব্যবসায়ী। চকরামপুর এলাকায় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বয়স প্রায় পয়তাল্লিশ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে আমরা সৎ ও সততার সাথেই এলাকায় বসবাস করছি। তবে বেশকিছু দিন ধরে সন্ত্রাসী জুয়েল মাঝে মাঝেই আমার বাবা ফরিদ আহমেদের কাছে এসে চাঁদা দাবি করতো। জুয়েল কোন কাজ করে না এবং সে নেশাগ্রস্থ। মাদকসেবী সন্ত্রাসী জুয়েলকে ব্যবহার করে কেউ আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার রাতেই পুলিশ সন্ত্রাসী জুয়েলকে আটক করে। কিন্তু এ ঘটনার পেছনে কে কে জড়িত তা বের করতে পারেনি, যা দুঃখজনক। তাকে(জুয়েলকে) জিঙ্গাসাবাদ করলেই প্রকৃত হুকুমদাতাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আরও জানান।
এঘটনায় নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনসুর রহমান জানান, ঘটনার রাতেই ভুক্তভোগীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেছেন। রাতেই জুয়েলকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।