ডেস্ক নিউজ
যার হারাবার কিছু নেই, চাওয়া-পাওয়াও নেই, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজ পরিবারের সকল সদস্যকে হারানোর পর আর কী-বা হারানো আছে তার। হয়ত সে কারণেই নিজের জীবনের পরোয়া না করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা দেশে ফেরার আগেই সর্বসম্মতিক্রমে তাকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তখন থেকেই আওয়ামী লীগের হাল ধরে মাঠে-প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর স্বাধীন বাংলাদেশের একমাত্র নেতা শেখ হাসিনা যার দেশের ৬৪ জেলার সকল উপজেলায় যাওয়া হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায় থেকে নতুন করে পুনর্জীবন দান করেন এই কার্যক্রমের মাধ্যমে। বাবার মতই সাধারণ মানুষের খুব কাছে থাকতেন তিনি। আর সে কারণেই তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে অগণিতবার। বিশেষত দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী এবং পাকিস্তানপন্থী চেতনার ধারক ও বাহকদের চক্ষুশূল ছিলেন তিনি।
দেশে ফিরে ঢাকায় লাখ লাখ জনতার সামনে শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। … পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।
বিগত ৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা যার সুযোগ্য নেতৃত্বে চারবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনাকে এই দীর্ঘ সময় দলের প্রধানের দায়িত্বে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। কারাবরণ, জীবনের ঝুঁকি, এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া ছাড়াও অনেক চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও দেশি-বিদেশি ঘাতকচক্র সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু ওই হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে তখন দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে ভারত থেকে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তার দল আওয়ামী লীগ। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হন দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকট আকার ধারণ করে। দ্বিধাবিভক্ত ও ব্র্যাকেটবন্দি হয়ে পড়ে দল। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাসিত জীবনে ভারতে অবস্থানকালে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। ওই বছরের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। শুরু হয় আরেক সংগ্রামী জীবন।
দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। বহুবার তার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী শহীদ হন।
শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জার্মানিতেও শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, যখন ভারতে শেখ হাসিনা নিজের নাম পরিচয় লুকিয়ে অবস্থান করছিলেন তখনও মেজর ডালিমের নেতৃত্বে একটি দল শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ভারতে যায়। যদিও শেষ পর্যন্ত তৎকালীন ভারত সরকারের সহায়তার কারণে মেজর ডালিমের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ডাকের পর সরাসরি সহায়তা করেছিলো আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত। এ সময় চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বৃহৎ শক্তির দেশ বাংলাদেশের বিরোধিতা করে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য ভারতকেও হুমকি দেয় তারা। কিন্তু সকলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে জীবন বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের সাদরে গ্রহণ করা হয়। তাদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করে ভারত সরকার। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং প্রদান এবং অস্ত্র সরবরাহের কাজটিও হয় ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তায়। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য উভয় সীমান্তে লড়াই করতে হয় ভারতের মিত্র বাহিনীকে। এই যুদ্ধে ভারতের উভয় সীমান্তে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ জন নিহত হন এবং ১০ হাজারের বেশি সৈন্য আহত হন যাদের অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করে।
শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে ভারত। এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রেও কূটনৈতিক সহায়তা করেছিলো ভারত। ভারতের সঙ্গে জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক আজো বহাল রয়েছে। করোনা মহামারিকালে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে করোনার ভ্যাকসিনের মজুদ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বিনামূল্যে উপহার প্রদান করে ভারত। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহের বিষয়েও একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এই দৃঢ় সম্পর্ক সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে।
বাংলাদেশে ২০০১-০৬ সালে গড়ে ওঠে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের এক সংস্কৃতি, যার ফলে ভারতের ‘সেভেন সিস্টারস’ হিসেবে পরিচিত রাজ্যগুলোতেও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে অনুপচেটিয়ার মতো চরমপন্থীরা। তৎকালীন বিএনপি জামায়াত সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে, বাংলাদেশ সীমান্তে বসে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে হামলা চালাতো এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ কারণে তখন বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে অনুপচেটিয়াদের মতো চরমপন্থীদের নিয়ে রাজনীতি করার বদলে তাদের কঠোর হস্তে দমন করে ভারতের সঙ্গে পরস্পর সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়। ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি সমস্যার ক্ষেত্রে পাশে থাকছে ভারত, সেই সঙ্গে ভারতের পাশেও থাকছে বাংলাদেশ। পদ্মাসেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংক যখন বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে তখনও ২০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা প্রদান করে ভারত। সর্বোপরি বলা যায়, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে বিশ্বের যে কোনও রাষ্ট্রের কাছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্কের এক রোল মডেল হয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই কাজটি করা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায়।
নিজ পরিবারের নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পর দেশে ফিরতে পারেননি শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন শেষে তিনি যখন দেশে ফেরেন তখনও নিজ পিতার বাস ভবন ‘ধানমন্ডি ৩২’-এ থাকার অনুমতি হয়নি তার। সেই সঙ্গে তাকে হত্যা চেষ্টা করা হবে এমন কথাও বারবার উচ্চারিত হচ্ছিলো। কিন্তু যার হারাবার কোনও ভয় নেই, তাকে দমানো এত সহজ নয়। দেশে ফিরে জিয়াউর রহমানের মৃত্যু শেষে এরশাদের ক্ষমতাগ্রহণ দেখতে হয় তাকে। এই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন করে যান তিনি। দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য তার অকুতোভয়ী সেই আন্দোলনের কথা কারো অজানা নয়। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে জয় লাভ করলেও ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে সরকার গঠন করে বিএনপি। সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নের বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিরোধী দল হিসেবে সংসদে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করলে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে শুরু হয় শেখ হাসিনার সংগ্রাম। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, কৃষকদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেন তিনি। ২০০১ সালে জামায়াত-বিএনপির ষড়যন্ত্রে ভোট কারচুপির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও হেরে গেলেও বিরোধী দল হিসেবে সংসদে বরাবরই সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ। দেশ বিরোধী যে কোনও চক্রান্ত রুখে দিতে এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংসদ ও রাজপথ উভয়ে স্থানে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ। এরপর দুই বছর সামরিক সরকারের অধীনে দীর্ঘ সময় কারাবরণ করেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে মুক্তি মেলে নির্বাচনের আগে। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করে ২০০৯ সালে। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লড়াই।
বাংলাদেশকে বর্তমানে বিশ্বে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত করছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলে যেই গতিতে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, রাজনৈতিক স্থিতি থাকলে তা অনায়াসে পার হয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি, মানবসম্পদ, অবকাঠামো, নিরাপত্তা, রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি।
পাকিস্তানের শোষণ নির্যাতন ও লুটপাটের কারণে ১৯৭০ সালে পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ঋণাত্মক ১৩.৯৭ শতাংশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ নেতৃত্বে মাত্র ১ বছরের মধ্যে ১৭.৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় বাংলাদেশের। বোঝাই যায় জাতির পিতা বেঁচে থাকলে এভাবেই এগিয়ে যেতো বাংলাদেশ। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার পর বাংলাদেশের উন্নয়ন যেন থমকে যায়। এ সময় জিডিপি’তে যা যুক্ত হতো তার বড় অংশ ছিল বৈদেশিক ঋণ। মানুষের মাথাপিছু আয় ও ঋণ এক সময় ছিল বেশ কাছাকাছি। ১৯৯৬ সালে ৫ বছরের জন্য আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে এই ঋণের কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শেখ হাসিনা যখন সরকার গঠন করে, এ দেশের মানুষ অন্য এক বাংলাদেশের গল্প শুনতে পায়।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০১০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৮০০ ডলার ছিল। চলতি বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৬৪ ডলার। অর্থাৎ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১ দশকে প্রায় ২৫৮ শতাংশ বেড়েছে মাথাপিছু আয়! শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিগত দশকে (২০১০-২০২০) টানা ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে যা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের বুকে বিস্ময়। এই মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেগবান। বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধুঁকছে করোনার কারণে তখনও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ। এমনকি চলতি অর্থ বছরেও প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের বেশি হতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে আইএমএফ। বর্তমান বিশ্বে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণ ও কার্যাবলী নিয়ে রীতিমত গবেষণা হচ্ছে। আর এর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দূরদৃষ্টির জন্য।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’ এখন পর্যন্ত সেটাই করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ দেশের মানুষের মাঝে রয়েছেন, মানুষের কাছে রয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের শিখরে।