বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রান্তজনের অর্থনীতিবিদ হিসেবে খ্যাত ড. আতিউর রহমান বলেছেন, কভিড-১৯ মোকাবিলা ও কভিড-পরবর্তী অর্থনীতির জন্য যেসব নীতি নেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ সঠিক পথেই রয়েছে। এ জন্য খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ তার হারানো অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কিত প্রতিটি খাতই সচল হয়েছে। গত মার্চ-এপ্রিলে সাধারণ ছুটিতে ছোট-বড় যারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সরকার কিন্তু সবাইকেই সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ফলে সবাই আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এটিকে বিশ্বের অনেক সংস্থাও স্বীকৃতি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার সে সময় কৃষি, শিল্প, রপ্তানিসহ সব খাতকেই সহায়তা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও নীতিগত সহায়তাগুলো বাস্তবায়ন করেছে তাৎক্ষণিকভাবে। সময় নষ্ট করে বাংলাদেশ ব্যাংক এ খাতের তারল্য পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সিআরআর-এসএলআর কমিয়েছে। কৃষকের ঋণ আদায় স্থগিত করা হয়েছে। এগুলোও বড় ধরনের নীতিসহায়তা। এ জন্যই কিন্তু তারল্যের কোনো ঘাটতি হয়নি। আবার কৃষকও বড় কোনো সমস্যায় পড়েনি। ফলে আমাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্যই বলা হয় নিয়ম-নীতি সহজ করাও এক ধরনের প্রণোদনা। কখনো কখনো এটাই বড় প্রণোদনা। এখন আবার দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এ জন্য আগের নেওয়া অনেক পলিসিই তো এখনো চলমান। এগুলো আরও কিছুদিন থাকবে। তবে এসএমই ও এমএসএমই খাতের জন্য আরও কার্যক্রম নিতে হবে। এ খাতের দিকে একটু বেশি নজর দিতে হবে। এখানে ব্যাংকগুলো প্রণোদনার নির্দেশনা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করছে কি না সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে। ব্যাংকগুলো বড় উদ্যোক্তাদের যেভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে, ছোটদের সঙ্গে ততটা অভ্যস্ত হতে পারছে না। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিদিনের লেনদেনের একটা পর্যবেক্ষণপত্র তৈরি করা যেতে পারে। প্রতিদিন কোন ব্যাংক কোন খাতে কোন গ্রাহককে কত টাকা দিচ্ছে, আবার কত টাকা রিকভারি হচ্ছে তা দৈনিক ভিত্তিতে তদারক করা যেতে পারে। তাহলে কোনো ব্যাংকই আর তথ্য গোপন করতে পারবে না। এতে তারল্য ও ঋণ পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিষ্কার একটা ধারণা পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।