ডেস্ক নিউজ
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, বাঙালি জাতির সব ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর এখনও প্রাসঙ্গিক। তিনি বাঙালিকে কেবল একটি দেশ উপহার দিয়েই নিশ্চুপ থাকেননি। বাঙালিকে রাজনৈতিক, অথনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে দেশ স্বাধীনের পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান গঠন করেছেন। যেখানে আইন রচনার প্রয়োজন হয়েছে সেখানে আইন তৈরি করেছেন। দেশ স্বাধীনের মাত্র দশ মাসের মধ্যে একটি পরিপূর্ণ সংবিধান উপহার দিয়ে তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এতে বাঙালির সব আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে এক আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল’ অ্যান্ড পলিটিক্স রিভিউ (ডিইউএলপিআর) এবং অক্সফোর্ড পলিটিক্যাল রিভিউ (ওপিআর) যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। ‘ফাউন্ডিং বাংলাদেশ : সেনটেনারি রিফ্লেকশন অন শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক এ আলোচনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের কমনওয়েলথ স্টাডিজের এমিরেটাস অধ্যাপক জেমস ম্যানর। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডিইউএলপিআরের এডিটরিয়াল চিফ আজহার উদ্দিন ভূইয়া এবং ওপিআর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নিকোলাস লিহ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আইন, খনিজসম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ ও উদ্যোগ নিয়েছেন সেসবের সুফল এখনও বাঙালি ভোগ করছে। তার পররাষ্ট্রনীতি ছিল সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। তার স্বপ্ন ছিল একটি সুখী ও সমৃদ্ধ এবং আত্মনির্ভরশীল ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। তার দেখানো পথে সফলতার সঙ্গে আমাদেরকে নিয়ে তারই কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। দেশ স্বাধীনের পর তিনি সেই পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু ঘাতকরা এই দেশের অগ্রগতি ও উন্নতি চায়নি। এজন্য ঘাতকরা জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এদেশে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের বিচার চাওয়ার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছিল। একুশ বছর পর জনগণের রায়ে সরকারে এসে তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা জাতির জনকের অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নেন। আজকে বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছেন।
অধ্যাপক জেমস মেনর বলেন, বাংলাদেশ যে সময়ে স্বাধীন হয় সেসময়ে এশিয়া ও আফ্রিকার আরও বেশকিছু কমনওয়েলথভুক্ত দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জনগণের জন্য যে পরিমাণ ত্যাগ-তিতিক্ষা ও কষ্ট স্বীকার করেছেন তা অন্য কোনো দেশের নেতাকে করতে হয়নি। স্বাধীনতার পর কঠিন সময় পার হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। পাকিস্তানি বাহিনী ৬ মিলিয়ন ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধ্বংস করে গেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাকে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। তার এই ত্যাগ ও সংগ্রামী জীবন তাকে অনন্য হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদ : এর আগে শিক্ষামন্ত্রী সন্ধ্যায় এই সংগঠন আয়োজিত জাতীয় শিক্ষক দিবসের এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় যোগ দেন। শিক্ষা ক্যাডারের মুক্তিযুদ্ধ চেতনায় বিশ্বাসী কর্মকর্তাদের এ আলোচনা সভার বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাভাবনা ও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা’। সংসদের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। আরও বক্তৃতা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এসএম গোলাম ফারুক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের যুগ্মপরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার, ড. রওনক জাহান বক্তৃতা করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংসদের সদস্য সচিব সৈয়দ জাফর আলী।