ডেস্ক নিউজ
বড়লেখায় আমন ধানের নতুন জাত ব্রি-৮৭, ৭৯ ও ৭২ চাষে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। এ ধানে রোগবালাই না থাকায় এবং আগাম ধান পাকায় কৃষকরা সহজে ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। আগাম ধান কাটার পর জমিতে চাষ করেছেন রবি শস্য। ফলে একই জমিতে দুই ফসল পাওয়া যাচ্ছে। এ সাফল্যে খুশি তারা। এছাড়া ব্রি-৪৯, বিনা-১৭, বিআর-২২ ধান চাষেও এসেছে সাফল্য।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, ৮ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল। যেখানে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫৪০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ১৩০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়। এতে ৩৭ হাজার ২৮০ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে উৎপাদন হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৯০ টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে কৃষক সমিতিকে ব্রি-৮৭, ৭৯ ও ৭২ ধান চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ার কারণে এলাকার কৃষকরা এ ধান চাষে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে এগুলোর ফলন ছড়িয়ে দিতে বীজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত ব্রি-৮৭ তে রোগবালাই নেই বললেই চলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। ধান পাকতে সময় লাগে মাত্র ১২৭ দিন। ব্রি-৭৯ ধানের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি ১৮ থেকে ২১ দিন বন্যার পানিতে ডুবে থাকলেও ফসলের তেমন ক্ষতি হয় না। ব্রি-৭২ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অন্যান্য জাতের চেয়ে কম হয়। বিনা-১৭ জাতের ধান চাষেও কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন। হাওর এলাকায় বিআর-২২ ধানও চাষ হয়েছে ব্যাপক হারে।
বড়লেখা সদর ইউনিয়নের উত্তর ডিমাই গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার নিজের কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করেছি ২১ কিয়ার (বিঘা)। বিআর-১০, বিআর-২২ ও ১১ জাতের ধান চাষ করেছি। ভালো ধান হয়েছে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সব সময় পরামর্শ দিয়েছেন। পৌরসভার মেয়রও খোঁজ নিয়েছেন। নিজে থেকে ধানের বীজ সংরক্ষণ করছি।’
সদর ইউনিয়নের সাতকরাকান্দি গ্রামের কৃষক শামীম আহমদ বলেন, ‘১৮ কিয়ার (বিঘা) জমি চাষ করেছি। ব্রি-৮৭ ও ৭২ জাতের ধান। খুব ভালো ফলন হয়েছে। ১৫ জনের একটি সমিতিতে আমরা ৫৫ মণ নতুন জাতের ধানের বীজ রেখেছি। এতে পুরো গ্রামের কৃষকদের মধ্যে বীজ বিতরণ করতে পারব।’
বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবল সরকার বলেন, ‘বীজ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে আমাদের কর্মীরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা মাঠপর্যায়ে তদারকিও করেছি।