সরকারি সকল কর্মকর্তা যেন শতভাগ সুস্থ-সবল থাকে এবং তাদের চাকরিতে নিয়োগের পূর্বে তাদের কোন বাজে স্বভাব বা মাদকাসক্তি আছে কিনা তা যাচাই করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের আগে সে ব্যক্তি মাদকাসক্ত কিনা সেজন্য প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কারোর বিরুদ্ধে মাদকগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনি যতই যোগ্যতা সম্পন্নই হোন, তাকে চাকরির জন্য বিবেচনায় আনা হবে না। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে এই প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব শহিদুজ্জামান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ, মানসের ড. অরূপ রতন চৌধুরী প্রমুখ। মন্ত্রী জানান, ১৯৮৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৪৭তম অধিদবেশনে ২৬ জুনকে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী বছর থেকেই বিশ্বব্যাপি প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সুস্বাস্থ্যই সুবিচার, মাদকমুক্তির অঙ্গীকার।’ দিবসটি পালনের জন্য সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দিবসটি পালনের তাৎপর্য সম্পর্কে আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদকদ্রব্য সেবনের ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সরকার তিনটি কর্মকৌশল অনুযায়ী কাজ করছে। দেশে মাদকের চাহিদা হ্রাস করা, মাদকদ্রব্যের সরবরাহ হ্রাস করা ও মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার জনিত ক্ষতিহ্রাস কার্যক্রম।
তিনি আরও বলেন, চাকরিতে ডোপ টেস্টের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করলে যুবসমাজের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। নিয়োগের সময় এমন বিধান বাধ্যতামূলক থাকলে শিক্ষার্থীরাও সচেতন হবে। তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে যেমনভবে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে বর্তমানে যারা চাকরি করছেন, তাদেরও এ টেস্ট দিতে হবে। বর্তমানে চাকরিরত কারো বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে গতিশীল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। মাদকনিয়ন্ত্রণ আইনকে যুগোপযোগী করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রকে ৫০ থেকে ১২৪ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০৭টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের অনুকূলে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মাদকবিরোধী জনমত তৈরি করা হচ্ছে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন চলছে।