ডেস্ক নিউজ
রফতানিকারকদের ব্যয় কমানো এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। এর ফলে নতুন নতুন পণ্য ও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বছর রফতানিতে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অর্জিত হলে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। কোভিডের কারণে দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর বর্তমানে রফতানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি সংক্রান্ত নগদ সহায়তা সংশ্লিষ্ট এফই সার্কুলারসমূহের ওপর নলেজ শেয়ারিং’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ইপিবি চেয়ারম্যান বলেন, সরকার ৪২টি পণ্যে বিভিন্ন হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে থাকে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ খাতে রফতানির পরিমাণ প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। তিনি এ ধরনের সেমিনার এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় ইপিবির কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও ব্যবসাবান্ধব করতে সহায়ক হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
ইপিবি চট্টগ্রামের পরিচালক শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে চিটাগাং চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্যানেল আলোচক চিটাগাং চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, বিকেএমইএর পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ইপিবির পরিচালক আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন ও বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্মপরিচালক মোহাম্মদ আরাফাত আলী।
চট্টগ্রাম চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আমাদের অন্যান্য সম্ভাবনাময় সেক্টর যেমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, বাইসাইকেল ইত্যাদি খাতে রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত উন্নতি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারী প্রণোদনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে সব সেক্টরকে যদি সমানভাবে অর্থাৎ ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া যায় তাহলে রফতানি খাতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। প্রণোদনার ওপর থেকে কর আদায় প্রত্যাহার করা উচিত। প্রচলিত সেক্টরের বাইরেও সমীক্ষার মাধ্যমে সম্ভাবনা যাচাইপূর্বক আরও নতুন নতুন সেক্টরকে নগদ প্রণোদনার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং নগদ প্রণোদনা পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা প্রয়োজন। তিনি ২০২৬ সালের পরে ডব্লিউটিও রুলস অনুযায়ী ইনসেনটিভ দেয়া যাবে না বিধায় ভিন্ন নামে এ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই পোশাক খাত ছাড়াও অল্প পুঁজি এবং ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে। তিনি নতুন বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে নগদ প্রণোদনার পাশাপাশি প্রতিবন্ধকতা দূর করে সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ইপিবিকে বিশ্বের চাহিদাগুলোকে চিহ্নিতপূর্বক নীতি সহায়তা এবং বিশাল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার কথাও বলেন। বিকেএমইএর পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নগদ সহায়তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য সমস্যা চিহ্নিত এবং সমাধান করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
প্যানেল আলোচক চিটাগাং চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, সরকার বেসরকারী খাতের উন্নয়নে অনেক ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে, যা আরও বেশি, করে প্রচার করতে হবে যাতে উদ্যোক্তারা এ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হতে পারে। নগদ প্রণোদনা প্রদানের প্রক্রিয়াটি অটোমেশনে রূপান্তরের বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট সংক্রান্ত তথ্যের জন্য একটি পৃথক ওয়েবপোর্টাল চালু করার দাবি জানান।