ডেস্ক নিউজ
সিলেটের জকিগঞ্জে দেশের ২৮তম গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন এক কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা জানান।
নসরুল হামিদ বলেন, এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে আগামী ১২-১৩ বছর গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। গ্যাসক্ষেত্রটিতে মোট ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত আছে। এর মূল্য প্রায় ১২শ কোটি টাকা। আমরা জকিগঞ্জে আরো ৩টি স্থানে গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করছি। সে সব স্থানেও গ্যাস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে এখানে পাইপলাইন নির্মাণ হবে। গ্যাসক্ষেত্রটি বাপেক্সের বড় ধরনের সফলতা। বাপেক্স আধুনিক চিন্তাভাবনা করছে। সম্ভাবনার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। সিলেট গ্যাসফিল্ডে আরো ১০টি ড্রিলিংয়ের প্রস্তুতি নিয়েছে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামে সার্ভে ও নতুন করে ড্রিলিংয়ের জন্য নতুনভাবে কাজ শুরু করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ৯ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এদিন ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয়ের মধ্য দিয়ে দেশের রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রের যাত্রা শুরু হয়। সেই সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দারুণ দূরদর্শিতা ও সাহসিকতা দেখিয়েছেন। সেই গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখনো আমরা গ্যাস পাচ্ছি। এখন দেশে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশ যে উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছে, তার পেছনে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। এবার এ খাতে অর্জন ১০৫ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন প্রাপ্তি ছিল এক হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বর্তমানে আড়াই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমরা পাচ্ছি। বলা যেতে পারে, প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বর্তমান সরকারের সময়ে আমাদের পাইপ লাইনে সংযোগ হয়েছে।
গত ১৫ জুন সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভার আনন্দপুর গ্রামের ফায়ার স্টেশন লাগোয়া একটি কৃষি জমিতে গ্যাস পাওয়ার কথা জানায় বাপেক্স। ১৬ জুন বাপেক্সের প্রতিনিধি দল সার্বিক বিষয় পরীক্ষার জন্য ঢাকা থেকে সিলেটে যায়। গত ১ মার্চ থেকে ৭ মে পর্যন্ত খননকাজ করা হয়। গতকালের ঘোষণার মাধ্যমে দেশের ২৮তম গ্যাস ক্ষেত্রের স্বীকৃতি পেল জকিগঞ্জ। এখন একটি কূপ খনন করলেও, সামনে আরো দুই থেকে মোট ৩টি কূপে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে বাপেক্স।
উল্লেখ্য, এর আগে দেশে ২৭টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। এসব গ্যাসক্ষেত্রে মজুতের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ টিসিএফ, আরো ৬ টিসিএফ গ্যাস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।