ডেস্ক নিউজ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করা হলো কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০ লক্ষাধিক বাঙালির এক সমাবেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। গতকাল শনিবার সেই ঐতিহাসিক ক্ষণটির স্মরণ করা হলো সেদিনের জায়গাটিতেই।
বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী সেই ভাষণে ছিল স্বাধীনতার আনন্দ, স্বজন হারানোর বেদনা, ভারতের প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা ও চিরঞ্জীব সম্প্রীতি আর স্বাধীনতাবিরোধীদের সমালোচনা। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরদিন অটুট থাকবে।’
গতকাল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুন সারোয়ার কমল, কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান, মোফাকখারুল ইকবাল, সাংবাদিক সন্তোষ শর্মা ও সুভাষ সিংহ রায় এবং দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) শাবান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের গভীরতায় দু’দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব। যে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, মানবিক-অর্থনৈতিকসহ সকল সূচকে সেই দেশকে অনেক পেছনে ফেলে আমরা এগিয়ে গেছি। আজ পাকিস্তানের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি দেখে হা-হুতাশ করে। তারা বাংলাদেশের মতো হতে চায়, এখানেই স্বাধীনতার বিরাট সার্থকতা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকারের অনুমতি মিললে কলকাতায় স্থপিত হবে বঙ্গবন্ধু নামাঙ্কিত জাদুঘর ও ভাস্কর্য।
সুব্রত মুখার্জি বলেন, বঙ্গবন্ধু পশ্চিমবঙ্গের কাছের মানুষ ছিলেন। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সেদিন দুপুর ১টার মধ্যে কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল ব্রিগেড। ৩টার সময় রাজভবন থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী এই ব্রিগেডে আসেন। এটা আজ পর্যন্ত আমার দেখা ব্রিগেডে সর্বকালের সেরা জনসমাবেশ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকার জন্য মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত ভারতীয় গুণীজনের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ড. হাছান মাহমুদ ও সুব্রত মুখার্জি। এ সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন দুই বাংলার শিল্পীরা। এর আগে দুপুরে কলকাতা প্রেস ক্লাব চত্বরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক দীপক বন্দোপাধ্যায় ও সুরজিত ঘোষালের স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর ও সচিব কিংশুক প্রামাণিক এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন।