ডেস্ক নিউজ
সৌদি আরবের হাইল প্রদেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) হাইল প্রদেশের চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল আজিজ খালাফ আল জাকদির সঙ্গে বৈঠককালে রাষ্ট্রদূত এ আহ্বান জানান।
রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় বিনিয়োগ করতে পারে। সম্প্রতি এ বিষয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ায় এ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য সৌদি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন। সৌদি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সৌদির চেম্বার সভাপতি বাংলাদেশের হালনাগাদ অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সম্ভাব্য ব্যবসায়িক খাতসমূহ যেখানে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ব্যবসা করার সুযোগ রয়েছে সে সম্পর্কে সাম্প্রতিক তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানান। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক খাতসহ বিস্তারিত প্রোফাইল পাঠাতে অনুরোধ করেন, যা চেম্বার সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
চেম্বার সভাপতি জানান, তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও ব্যবসার সুযোগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়ে সফলতার অংশীদার হতে চান। হাইল চেম্বার বাংলাদেশকে তাদের পরবর্তী ব্যবসায়িক গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরে বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানির জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান। এছাড়া বাংলাদেশের হস্তশিল্প, সিরামিক, তৈরি পোশাক ও চামড়াজাত পণ্য আমদানির জন্যও ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন।
সৌদির বাণিজ্যিক গোপনীয়তা বিরোধী আইনের বিষয় তুলে ধরে চেম্বার সভাপতিকে রাষ্ট্রদূত জানান, অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা নিবন্ধন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন কিন্তু দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দূতাবাস থেকে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অভিবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের নিয়ে নিয়মিত পরামর্শ সভাও করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত অভিবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা নিবন্ধনে যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে চেম্বার সভাপতিকে অনুরোধ করেন। তিনি চেম্বার সভাপতিকে বাণিজ্যিক গোপনীয়তা বিরোধী আইন বিষয়ে কোনো পরামর্শমূলক সভা আহ্বান করলে দূতাবাস ও অভিবাসী বাংলাদেশিদের অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত সৌদির ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার বিষয়ে সহায়তা কামনা করেন।
এর আগে রাষ্ট্রদূত হাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি রেক্টর ড. রাশিদ বিন মুসলাত আল শরীফের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি সৌদি আরবের সবুজায়ন উদ্যোগের আওতায় মরুভূমির উপযোগী বৃক্ষরোপণ, মরুভূমির বিলুপ্ত বৃক্ষসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ফেলোশিপের আওতায় যৌথ গবেষণার প্রস্তাব দেন। এছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ছাত্রদের বৃত্তি বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন।
এসব সভায় দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান ও কাউন্সেলর বেলাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।