ডেস্ক নিউজ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমতে থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন খুলে দেওয়া যায়, এমন মত দিয়েছে জাতীয় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
বুধবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কমিটি এই মত জানায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২২ ফেব্রুয়ারিই খুলতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিটির এক সদস্য।
এদিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও বলেছিলেন, এই মাসেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
কোভিড মহামারীর কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সব স্কুল-কলেজ খুলে দিয়েছিল সরকার। পরে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খুলেছিল।
কিন্তু করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে এ বছরের শুরু থেকে সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করলে গত ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। এরপর ছুটি বাড়তে বাড়তে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে।
মাঝে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজারও ছাড়িয়েছিল, শনাক্তের হারও পৌঁছেছিল রেকর্ড উচ্চতায়। এখন শনাক্ত রোগী ৪ হাজারের নিচে নেমেছে, শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বুধবার মহামারী মোকাবেলার বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসে শিক্ষার নীতি-নির্ধারকরা, যাতে ভার্চুয়ালি যোগ দেন মন্ত্রী দীপু মনি।
বৈঠক শেষে কোভিড পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়ার জন্য মত দিয়েছি।”
কমিটির সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে এসেছে, এ অবস্থায় স্কুল খুলে দেওয়া যায়। ২১ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ, ২২ তারিখ থেকে তা খুলে দেবে।”
তিনি বলেন, “১২ বছর বা তার বেশি বয়সী বাচ্চারা যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছে, তাদের এখন স্কুলে যেতে কোনো বাধা নেই। ১২ বছরের কম বয়সীরা এখন স্কুলে যেতে পারবে না, কারণ তারা দুই ডোজ টিকা নেয়নি।”
কমিটির প্রধান অধ্যাপক সহিদুল্লাহ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি যথাযথ ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, দ্বিতীয়টি দুই ডোজ টিকা নিতে হবে।
টিকা না নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, “তারা অন্যদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে না। সেজন্য তাদেরকে না যেতে বলব আমরা।”
১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের সরকার এখনও টিকা দেওয়া শুরু করেনি। বৈঠকে এসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি বলে জানান ডা. সহিদুল্লাহ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের বিষয়ে দীপু মনি সকালে চাঁদপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় যেভাবে যতটুকু ক্লাস নেওয়া সম্ভব আমরা কতটুকু করব। যত দ্রুত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি থেকে আমরা স্বাভাবিকে যেতে পারব, তত দ্রুত আমাদের সব ক্লাস স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়ে যাবে।”