প্রথম ধাপে ২৪ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। সবকটি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ভোট নেয়া হচ্ছে।
পঞ্চগড়ে পৌর নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১ পুলিশ সদস্য। তবে পরিস্থিতি শান্ত থাকবে বলে আশা করছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে ও নির্বাচনী পরিস্থিতি ভালো। আশা করি, ভোটেও তা বজায় থাকবে।h
পাঁচটি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মেয়র পদে ৯৪ প্রার্থী থাকলেও বরাবরের মতোই ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা আর বিএনপির প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির প্রার্থীরা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এসব পৌর এলাকায়, তারা দলীয় প্রতীকে। পাশাপাশি লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও। সহস্রাধিক প্রার্থী রয়েছে সাধারণ ও কাউন্সিলর পদে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটের প্রচার নিয়েই মূলত দুয়েকটি এলাকায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
২৪টি পৌরসভার মধ্যে ২৩টিতেই আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেবল রাজশাহীর পুঠিয়ায় আওয়ামী লীগসহ দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও সেখানে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। কয়েকটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীও মাঠে রয়েছেন।
ইসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৪টি পৌরসভায় মেয়র পদে ৯৪ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৬৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮০১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। ইসির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, গত শনিবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সব নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রবিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনের এবং হাইওয়েতে চলাচলকারী গাড়ি এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
২৪টি পৌরসভায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৩১৯টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ২৪ হাজার ৮০৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৭ হাজার ৩৭ জন এবং নারী ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৭০ জন। ভোটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১ হাজার ২৭৬ জন পুলিশ, ২ হাজার ৮৭১ জন আনসার, ৭২টি র্যাবের টিম, ৫০ প্লাটুন বিজিবি, মোবাইল ফোর্স ৭২টি এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স ২৪টি মোতায়েন থাকছে।
যে ২৪ পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে তা হলো- পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, রংপুরের বদরগঞ্জ, কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম সদর, রাজশাহীর পুঠিয়া ও কাটাখালী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, কুষ্টিয়ার খোকসা, চুয়াডাঙ্গার চুয়াডাঙ্গা সদর, খুলনার চালনা, বরগুনার বেতাগী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, বরিশালের উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, নেত্রকোনার মদন, মানিকগঞ্জের মানিকগঞ্জ সদর, ঢাকার ধামরাই, সুনামগঞ্জের দিরাই, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড।
দেশে পৌরসভা রয়েছে মোট ৩২৯টি। প্রথম ধাপের মাধ্যমে পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হলো। ইতোমধ্যে তিন ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় এবং তৃতীয় ধাপে ৬৪ পৌরসভায় ৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।