ডেস্ক নিউজ
রাষ্ট্রমালিকানাধীন তিন চিনিকল বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালনা করতে চায় সরকার। সেতাবগঞ্জ, রাজশাহী ও মোবারকগঞ্জ চিনিকল এ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চিনিকলের বেসরকারিকরণ নিয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ বৈঠকে শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক, কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম আলম (রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশন) সমকালকে বলেন, তিনটি চিনিকল বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালনার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। থাইল্যান্ডের সুগার ইন্টারন্যাশনাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি সংস্কারে যে অর্থায়ন দরকার হবে, তা জাপানের ব্যাংকিং ফর ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন (জেবিআইসি) এবং এপিম ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আগামী ২৭ এপ্রিল আরও একটি বৈঠক হবে।
লোকসানে থাকা চিনিকলগুলোকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে লাভজনক করার পরিকল্পনা কয়েক বছর আগে নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। এখন থাইল্যান্ডের সুগার ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএইভিত্তিক সারাকার ইন্টারন্যাশনাল, আওয়াদ আল আমরি ও বেদোয়ার যৌথ উদ্যোগে গঠিত কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে সেতাবগঞ্জ, রাজশাহী ও মোবারকগঞ্জ চিনিকল পরিচালনার আলোচনা চলছে। এই তিন চিনিকলের সংস্কারে যে বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে তার ৩০ শতাংশ অর্থ দেবে বিদেশি কোম্পানি। বাকি ৭০ শতাংশ অর্থ জেবিআইসি এবং এপিম ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে। এই ঋণের গ্যারান্টি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো দিতে পারবে কিনা মঙ্গলবারের বৈঠকে সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। যদিও বৈঠকে একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, এ ধরনের যৌথ উদ্যোগে তাদের পক্ষ থেকে ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়ার সুযোগ নেই।
বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চিনিকলগুলোর বিষয়ে কোনো পক্ষই জোরালো ভূমিকা নিচ্ছে না। ফলে যৌথ অংশীদারিত্বে পরিচালনার উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
অনেক পুরোনো হওয়ায় কয়েকটি চিনিকলের উৎপাদন ক্ষমতা একেবারে কমে গেছে। ফলে গত পাঁচ বছরে এ খাতে প্রায় চার হাজার ৩৫১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এর মধ্যে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে লোকসান হয়েছে ৯১৩ কোটি টাকা। লোকসান কাটিয়ে উঠতে ও চিনিকলগুলোকে আধুনিকায়নের জন্য ২০১৯ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়।