ডেস্ক নিউজ
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বর মাসে ১৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
মাস হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। মাসের হিসাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সেপ্টেম্বরে। প্রতি বছর দুই ঈদের পর রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কম থাকে। কিন্তু আগস্টে ঈদুল আজহার পরে রেমিট্যান্স না কমে বরং বেড়েছে। দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে বেশ কয়েকমাস ধরেই রেমিট্যান্স বাড়ছে।
এর আগে গত মে মাসে রোজার ঈদকে সামনে রেখে ১৭৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা। যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল জুলাই মাসে, ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১৮ সালের মে মাসে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানান, মূলত প্রণোদনা দেওয়ার সুখবরে বাজেটের পর থেকেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এদিকে রেমিট্যান্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার স্থিতি বা রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে। সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৪৫১ কোটি ৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসেছিল ৩৮৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এ হিসাবেই এই তিন মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। উল্লেখ্য, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা পাবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালায় উল্লেখ করেছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা পেতে ১ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগবে না। তবে রেমিট্যান্সের পরিমাণ এই অঙ্কের বেশি হলে প্রাপককে প্রেরকের পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র অবশ্যই জমা দিতে হবে। আর ব্যবসায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি দাখিল করতে হবে। উল্লেখ্য, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ বা ১৬.৪২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক আগের অর্থ বছরের (২০১৭-১৮) চেয়ে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।