দেশজুড়ে আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের উপস্থিতি ছিল জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিনি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী হান্নান মিয়া নিজেও এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। তিনি কয়েকদিন আগেও তিতাস গ্যাসকে এ লাইন সংস্কারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিতাস তখন ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ার কারণে লাইন মেরামত বা সংস্কার করেনি। ফলে লিকেজ হয়ে অন্য দিনের মতই গ্যাস জমে যায় মসজিদে। আর গরমের কারণে এসি চালানোর ফলে বাতাস বের হতে না পারায় মূলত দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এদিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর মিয়া জানান, কয়েকদিন আগেও আমাদের একজন লোক সাঈদ সাহেব তিতাসকে গিয়ে লিকেজের কথা জানায়। তখন তিতাস থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। কিন্ত এত টাকা যোগাড় করা যায়নি। ফলে আমাদের এতো বড় হতাহতের ঘটনা ঘটল।
স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘আশার আলো কল্যাণ সংসদ’র সভাপতি ওয়াসিম ইকবাল এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় নাশকতার সন্দেহ পোষণ করে ঘটনাস্থল রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
এছাড়া, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিকেলে এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, তিতাস কর্তৃপক্ষের কারো কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্যাস সংযোগের উপর দিয়ে মসজিদের বাইরের অংশ নির্মাণের কারণেই লিকেজ সৃষ্টি হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি তিতাস কর্তৃপক্ষের কারো কোনো অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এ এলাকাটিতে রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণসহ অধিকাংশ বাড়িতেই অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনার পর শনিবার এ মসজিদে ফজরের আজান হয়নি। অনুষ্ঠিত হয়নি নামাজও। এর আগে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি গফুর মেম্বারের ভাই আবুল কাশেম জানান, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। খবর পেয়েছি, মুয়াজ্জিন ও ইমাম মারা গেছেন।এ ঘটনায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।