নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৈয়দ মেহেদী হাসান ও মির্জা শাফি কালাম দুই বন্ধু । নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে এইচএসসি পাশ করেন তারা। মেহেদী হাসান নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে বিবিএ সম্পন্ন করেছে আর শাফি কালাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র।বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ব্যবসায় নেমে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। নিজেদের হাত খরচের পাশাপাশি পরিবারেরও হাল ধরছেন তারা। ইতোমধ্যে আমের ব্যবসা শুরু করেছেন সিংড়ার দুই বন্ধু সৈয়দ মেহেদী হাসান ও মির্জা শাফি কালাম। আমের মৌসুম হওয়ায় জমে উঠেছে তাদের ব্যবসা। রাজশাহী ও সিংড়ার বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করা আম এই তরুণদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এ বিষয়ে কথা হয় তরুণ উদ্যোক্তা সৈয়দ মেহেদী হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা ‘চাষি ঘর’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ খুলি এবং প্রচারণা চালাতে শুরু করি। আমাদের প্রচার-সহযোগিতায় এগিয়ে আসে বন্ধু বান্ধব ও পরিচিতজন। আমাদের প্রতি গ্রাহকদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়তে থাকে। মেহেদী আরও বলেন, আমরা সর্বপ্রথম ক্রেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ করে দামসহ যাবতীয় তথ্য দিয়ে থাকি। সব শুনে তারা যখন অর্ডার কনফার্ম করেন, তখন কুরিয়ার খরচ বা ক্ষেত্র বিশেষ অর্ধেক খরচ অগ্রিম নিয়ে নিই। বেশিরভাগ অর্ডার আমরা কুরিয়ারে পাঠাই। তবে পরিমাণে বেশি অর্ডার থাকলে বাস, ট্রাক বা ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে পাঠাই। বাংলাদেশ সরকার ম্যাংগ্যো স্পেশাল ট্রেন চালু করায় আমাদের সুবিধা হয়েছে। করোনা কালে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মির্জা শাফি কালাম জানান তাদের এই পথচলার গল্প। তিনি বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, বাসাতেই বসেছিলাম,অবসর সময় কাটছিল। তাই দুই বন্ধু মিলে শুরু করি অনলাইনে আম বিক্রি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্রেতারা বাজার থেকে যে আমগুলো কিনে খান, সেগুলোতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও মেডিসিন দেওয়া থাকে। আমরা একদম সরাসরি বাগান থেকে ফ্রেশ আম সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ শুরু করি। এবং বেশ সাড়া পাচ্ছি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী অনলাইনে আম, লিচু বিক্রিতে ঝুঁকছেন এবং নিজেরা সাময়িক একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন। নাটোরের সিংড়ার এই দুই তরুণ শিক্ষার্থীর আম ব্যবসার সফলতার গল্প এরই মধ্যে অন্যদের মধ্যে অনুপ্রেরণার মাধ্যম হয়েছে।জানা যায়, ‘চাষিঘর’ থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক পার্সেল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। প্রায় শতভাগ ক্রেতা ভালো রিভিউ দিয়েছেন। তারা প্রত্যাশা করেন, আমের মৌসুম শেষ হতে হতে হাজারেরও বেশি পার্সেল পাঠাতে পারবেন।