ডেস্ক নিউজ
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপালের চেয়ে উপরে বাংলাদেশের অবস্থান।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচক-২০২১-এর তালিকায় বাংলাদেশ ১০০ স্কোরের মধ্যে ৫৬.৫ স্কোর নিয়ে ১৮৪ দেশের মধ্যে ১২০তম অবস্থানে রয়েছে। একই স্কোর নিয়ে ১২১তম অবস্থানে আছে পাশের দেশ ভারত।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘দি হ্যারিটেজ ফাউন্ডেশন’ গত ২৭ বছর ধরে এ সূচক তৈরি করছে।
সূচকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, নিজের শ্রম ও সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন একটি সমাজে ব্যক্তি কাজ করার, উৎপাদন করার, ভোগ করার এবং যেভাবে খুশি সেভাবে বিনিয়োগ করার স্বাধীনতা ভোগ করেন। অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন দেশে সরকার শ্রম, পুঁজি এবং পণ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করে।
এ বছরের সূচকে বাংলাদশের গত বছরের চেয়ে ০.১ পয়েন্ট অগ্রগতি হয়েছে। কর সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু উন্নয়ন ঘটানোয় স্কোরেও পরিবর্তন এসেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এই স্কোর নিয়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৫। আর সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। উপরে আছে শুধু ভুটান। সূচকে ভুটানের অবস্থান ১০৯, আর স্কোর ৫৮.৩।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ওই সূচকে ৫১.৭ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫২, নেপাল ১৫৭, শ্রীলঙ্কা ১৩১, মালদ্বীপ ১৩৬ এবং আফগানিস্তান আছে ১৪৬ অবস্থানে।
তারপরও বাংলাদেশে অবস্থান অন্যান্য অঞ্চল ও গড় স্কোরের চেয়ে নিচে বলে জানিয়েছে ওই সূচক।
সূচকে বলা হয়েছে, গত দশকের তুলনায় বাংলাদেশে অগ্রগতি খুব ধীর হলেও অনেকটা স্থিতিশীল। এই সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ৭.৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ এই স্কোর নিয়ে ‘মোস্টলি আনফ্রি’ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ এই সময়ের মধ্যে সরকারি নিয়ন্ত্রণে ব্যয় ও ঋণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। পাশাপাশি আইনের শাসনের ব্যাপারেও খুব ভালো অগ্রগতি করেছে দেশটি এবং ব্যাংকিং খাতে বিদেশিদের সঙ্গে একটা প্রতিযোগিতায় যেতে পেরেছে।
কোভিড-১৯ মহামারি সময়ে বিশেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৬ হাজার ৬৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমে যায় ৩.৮ শতাংশ।
সূচকে চারটি বিষয় স্থান পেয়েছে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে। এগুলো হলো, আইনের শাসন, সরকারের আকার, নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা এবং মুক্তবাজার।
এগুলোর মধ্যে গত দশকে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে সরকারের আকারে। সেখানে শুল্ক সুবিধাসহ বেশ কিছু সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে অনেক।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকে সবার উপরে অবস্থান করছে সিঙ্গাপুরের। ৮৯.৭ স্কোর নিয়ে দেশটির অবস্থান প্রথম। ফ্রি ক্যাটাগরিতে সিঙ্গাপুরের পরে আছে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। তাদের স্কোর যথাক্রমে ৮৩.৯, ৮২.৪, ৮১.৯ ও ৮১.৪।
মোট ছয়টি ক্যাটেগরিতে এ সূচক প্রকাশ করা হয়েছে। সবার উপরে আছে ‘ফ্রি’, যাতে স্থান পেয়েছে পাঁচটি দেশ, পরের ‘মোস্টলি ফ্রি’ ক্যাটেগরিতে ৩৩টি দেশ, ৫৯টি দেশ স্থান পেয়েছে ‘মডারেটলি ফ্রি’ ক্যাটাগরিতে, ‘মোস্টলি আনফ্রি’ ক্যাটাগরিতে স্থান পয়েছে বাংলাদেশসহ ৬৩টি দেশ। এর নিচে ১৮টি দেশের স্থান হয়েছে ‘রিপ্রেসড’ ক্যাটাগারিতে এবং র্যাংকিংয়ে আসেনি ছয়টি দেশ।