রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ স্বামীর জন্য রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অভিযুক্ত ধর্ষক ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) র্যাব-২ এর এএসপি আবদুল্লাহ আল মামুন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভিকটিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে মিরপুর থানার মনিপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে ধর্ষক মনোয়ার হোসেন সজীব (৪৩) ও তার সহযোগী মাশনু আরা বেগম শিল্পীকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।’
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে এক নারী তার স্বামীকে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের ভর্তি করান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান তার স্বামীর জন্য রক্ত প্রয়োজন। চিকিৎসক তাকে জরুরিভাবে রক্তের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি রক্ত জোগাড় করার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকের সামনে যান। ব্লাড ব্যাংকের সামনে তিনি ৩/৪ জন পুরুষ বসা দেখতে পান। তাদের কাছে (o+) রক্তের বিষয়ে জানতে চান তিনি। বসা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ওই নারীকে রক্তের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তার নাম মনোয়ার হোসেন সজীব। ১৬ সেপ্টেম্বর দেড়টার দিকে ওই নারীকে মিরপুরের মনিপুর পাড়ার শিফা ভিলা নামে একটি বাড়ির ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় সজীব। সেখানে মাশনু আরা বেগম শিল্পী নামে এক নারী ভাড়া থাকেন।
ওই নারী র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন, মাশনু আরা বেগম শিল্পীর বাসায় মনোয়ার হোসেন সজীব তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ভিকটিম এ বিষয়ে কাউকে জানালে এবং চিৎকার করলে গলা চেপে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় সজীব।
ভিকটিম লোকলজ্জার ভয়ে ও স্বামীর অসুস্থতার কারণে ধর্ষণের বিষয়টি তাৎক্ষণিক গোপন রাখেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সজীব ভিকটিমের স্বামীর মোবাইলে কল করে ফের ওই নারীকে রক্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় পাঠিয়ে দিতে বলেন। তখন ভিকটিম পুনরায় ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে তার স্বামীকে ধর্ষণের বিষয়টি খুলে বলেন।
ভিকটিম এ বিষয়ে র্যাব-২ এর অধিনায়ক বরাবর অভিযোগ করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে র্যাবের একটি দল মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব ও মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পীকে গ্রেফতার করে।
আসামি মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব জানায়, মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পীর সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। ওই বাসায় অনৈতিক কার্যক্রম হয়।
গ্রেফতার মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীবের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানায়। সে বর্তমানে শ্যাওড়াপাড়ার একটি বাসায় থাকে। তার মা অসুস্থ থাকায় সে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়েছিল। মাশনু আরা বেগম শিল্পীর বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়, বর্তমানে মধ্য মনিপুরের শিফা ভিলায় ভাড়া থাকে। এই ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।