নাটোরের নলডাঙ্গার কৃতি সন্তান, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মারা গেছেন। আজ রবিবার দুপুর ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিলাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)!মরহুমের জানাজার নামাজ তারাবীহ নামাজ শেষে রাত ১০ টায় পটুয়াপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে এবং দাফন কার্য গাড়িখানা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে সম্পন্ন হবে।প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম রাজনৈতিক জীবনের সফল অধিকারী।
১৯৬০ সালে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে ছিলেন বৃহত্তর রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি । ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যূত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ছয় দফা আন্দোলনের সময়েও তিনি ছিলেন রাজনীতির মাঠে। ১৯৭০সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জনমত সংগঠনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরোটাই যুদ্ধের মাঠে কাটিয়েছেন তিনি ।১৯৭৩ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে স্বাধীন বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত সংসদের কনিষ্ঠতম এমপি নির্বাচিত হন। জাতীয় চার নেতার এক নেতা এইচ, এম কামরুজ্জামান হেনার দক্ষিণহস্ত হিসেবে পরিচিত সাইফুল ইসলাম ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহোচর।
১৯৭৫ সালের কাল রাতের পরবর্তী সময়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়াউর রহমান,জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার শাসন বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। নাটোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যাঁরা নিবেদিত প্রাণ বলে পরিচিত তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম অন্যতম প্রধান। সকল প্রতিকূলতাঁর মধ্যেও আওয়ামীলীগের রাজনীতি ছাড়েন নি তিনি। তাঁর চেষ্টায় গড়ে উঠেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নাটোরের পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবেযাদের সুনাম রয়েছে, তিনি তাদের অন্যতম একজন। গত ২৩ জানুয়ারী স্ট্রোক জনিত কারণে তিনি শেরে বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর একটু সুস্থ হলে তাঁকে নাটোরে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডক্যিাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। সাইফুল ইসলামের মৃতুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল। তিনি মহান আল্লাহ তায়ালা মরহুমের বিদেহী আত্মার জান্নাত কামনা করে মরহুমের জানাজা ও দাফন কার্যে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং দলীয় নেতা কর্মীদের উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
অপরদিকে সাইফুল ইসলামের মৃত্যুতে নাটোর ও নওগাঁ সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য রত্না অহমেদ ,নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান , নাটোর পৌর সভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি নাটোর বারের সভাপতি প্রশান্ত কুমার তালুকদার বাচ্চা ,সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মালেক শেখ, নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর, সাধারন সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মুকু,নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম পিয়াস,সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে মরহুমের জান্নাত কামনা করেন।