ডেস্ক নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই বিএনপি আজ আন্দোলন করতে পারছে। কিন্তু বিএনপির যারা খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত- তাদের ধরতে হবে। তাদের কোনো ছাড় নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওপরে মানুষের আস্থা রয়েছে বলেই তিনবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে; এবারও দেবে। কিন্তু যারা সন্ত্রাসী, খুনি, জনগণের অর্থ লুটপাটকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র পাচারকারী, বোমা-গ্রেনেড হামলাকারী ও অর্থ পাচারকারী জনগণ তাদের পাশে কোনো দিনই থাকবে না। জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, ভোটও দেবে না। এটাই হলো বাস্তবতা।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এই বৈঠকে আগামী ২৪ ডিসেম্বর শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওইদিন সকাল ১০টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় কাউন্সিলের জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করতে হবে। কতগুলো উপকমিটি করতে হবে। যেহেতু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে, ফলে এবারের সম্মেলন আমরা কোনো শানশওকত করে করব না। খুব সীমিত আকারে, অল্প খরচে এবং সাদাসিধাভাবে আমাদের সম্মেলন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এটি আমরা করে যাব। আমার কথা হচ্ছে, আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য আমরা যে পরিকল্পনাগুলো নিয়েছি সেটিও মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে তারা লুটপাট, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, অত্যাচার, নির্যাতন, খুন রাহাজানিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা না করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জনকারী বাংলাদেশকে তারা বিশ্বের কাছে ভিখারি দেশে পরিণত করেছিল। হাত পেতে চলার দেশে পরিণত করেছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আমরা তুলে এনে আজ আত্মমর্যাদাশীল একটি রাষ্ট্র করেছি। যে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের মানুষ সম্মানের চোখে দেখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এই উপমহাদেশের পুরোনো সংগঠন। এই সংগঠন আরও শক্তিশালী হোক। মানুষের জন্য কাজ করে হৃদয় জয় করে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। জনগণের ভোটে এসেছি, জনগণের আস্থা নিয়ে এসেছি। সেই আস্থা আমরা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ১৪ বছর আমরা এ দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রেখেছি। আওয়ামী লীগ আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এগুলো আমাদের মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বৈঠকের পর তাঁর সভাপতিত্বে বিকেল সাড়ে ৪টায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। এ সময় বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ূয়া। বৈঠকে জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ এবং বর্তমান আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া সারাদেশে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতি ও কৌশল নির্ধারণসহ একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।