আর্থিক সংকটে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া নেত্রকোনার কমলাকান্দা উপজেলার ছাত্রলীগ কর্মী মামুনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে টিম পজিটিভ বাংলাদেশ (টিপিবি)। মামুনের ঋণের এক লাখ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছে টিপিবি।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় রংছাতি ইউনিয়নের বিশাউতি গ্রামে মামুনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের হাতে এ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়৷ এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক জিএস ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী৷
গোলাম রাব্বানী জানান, ‘টিম পজিটিভ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মামুনের পরিবারের ঋণের এক লাখ টাকা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভালোবাসার উপহার হিসেবে মামুনের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অনতিবিলম্বে মামুনের মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী, টিপিবির পক্ষ থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার আরেকটি উপহার, বাছুরসহ একটি দুধ দেওয়া গাভী উপহার দেওয়া হবে। এছাড়া যেকোনো নৈতিক ও যৌক্তিক প্রয়োজনে মামুনের পরিবারের পাশে থাকবে টিম পজিটিভ বাংলাদেশ।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে কমলাকান্দা উপজেলা বিভিন্ন মিটিং মিছিল থেকে শুরু করে দলীয় বিভিন্ন কাজেই প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণ করে আসছিলো আল মামুন। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হতো তাকে। পরিবারের বড় ছেলে হয়েও পরিবারের জন্য কোন কিছু করতে না পারায় চরম হতাশায় ভুগতো। স্থানীয়রা সব সময় মামুনকে সহায়তার পাশাপাশি মানসিক হতাশা কাটাতে পরামর্শ দিয়েছেন। পাঁচ সদস্যের পরিবার মামুনের। বাবা চায়ের দোকানদার এবং বোন গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।
মামুন নিজেও টিউশনি ও টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পরিবারের দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড়ের চেষ্টায় থাকতো সবসময়। গত দুই বছরে পরিবারের আর্থিক অবস্থা দিনে দিনে খারাপের দিকে যেতে থাকে। মামুনের পরিবারের করুণ অবস্থা দেখে গত বছরের ডিসেম্বরের ১ তারিখ রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহেরা খাতুন নিজে প্রধানমন্ত্রী বরাবর মামুনের পরিবারের জন্য সাহায্যের আবেদন করেন।
সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর আত্মহত্যার পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিবারের আর্থিক সংকট কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তায় একটি পোস্ট করেন। এর পরপরই নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এই ছাত্রলীগ কর্মী।