ডেস্ক নিউজ
করোনাকালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী উদ্ভাবিত সিপ্যাপ ডিভাইস ‘অক্সিজেট’ আন্তর্জাতিক দুটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
গত নভেম্বরে অক্সিজেট এ স্বীকৃতি পায়। তবে বুয়েটের পক্ষ থেকে গত বুধবার গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।
অক্সিজেট একটি নন-ইনভেসিভ সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর। এটির মাধ্যমে হাসপাতালের সাধারণ বেডেই প্রতি মিনিটে ৬০ লিটার পর্যন্ত উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দেওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
অক্সিজেট একটি নন-ইনভেসিভ সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর
অক্সিজেট একটি নন-ইনভেসিভ সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর
ছবি: সংগৃহীত
বুয়েটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন ফোরামের স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক স্টার্টআপ প্রতিযোগিতা ইমাজিন ইফ-এ ‘গ্লোবাল উইনার’ (বৈশ্বিক বিজয়ী) ঘোষণা করা হয়েছে অক্সিজেটকে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সোসাইটির (বিএমইএস) ডিজাইন প্রতিযোগিতায়ও অক্সিজেট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ইনোভেশন ফোরাম আয়োজিত ‘ইমাজিন ইফ’ প্রতিযোগিতাটি হয় দুই পর্বে। প্রথম পর্বটি অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, লন্ডন, ম্যানচেস্টার, বার্সেলোনা, নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, কোপেনহেগেন, হংকং, কুয়ালালামপুর, লুসান, ওকিনাওয়া, ইউস্কাদি ও ঢাকায় অবস্থিত সংস্থাটির আঞ্চলিক শাখায় অনুষ্ঠিত হয়।
অক্সিজেট বিদ্যুৎ ছাড়াই চলে
অক্সিজেট বিদ্যুৎ ছাড়াই চলে
ছবি: সংগৃহীত
পাঁচ শতাধিক স্টার্টআপের মধ্যে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান অধিকারীদের থেকে সেরা ১৫টি নির্বাচিত হয়। গত আগস্টে বাংলাদেশ ও ভারতের সেরা ১০টি স্টার্টআপের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ‘অক্সিজেট’ দ্বিতীয় হয়ে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়।
গত ১১ নভেম্বর স্পেনের বার্সেলোনায় ‘ইমাজিন ইফ’-এর ‘গ্লোবাল ফাইনাল’ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অক্সিজেটকে ‘গ্লোবাল উইনার’ ঘোষণা করা হয়। এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার কোনো স্টার্টআপ ইমাজিন ইফ প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করল।
প্রতিযোগিতার বিচারক প্যানেলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার হেড অব ইনোভেশনসহ বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।
অক্সিজেটের মাধ্যমে হাসপাতালের সাধারণ বেডে প্রতি মিনিটে ৬০ লিটার পর্যন্ত উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দেওয়া যায়
অক্সিজেটের মাধ্যমে হাসপাতালের সাধারণ বেডে প্রতি মিনিটে ৬০ লিটার পর্যন্ত উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দেওয়া যায়
ছবি: সংগৃহীত
বিজয়ী ঘোষণার আগে বিচারকেরা বলেন, তাঁরা বৈশ্বিক মহামারি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বুয়েটের অক্সিজেটের অগ্রগতির পাশাপাশি জনসাধারণের জন্য তার প্রত্যক্ষ প্রভাবের কারণে এটিকে (অক্সিজেট) সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে বিএমইএস আয়োজিত ডিজাইন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাছাই করা করোনা–বিষয়ক সেরা তিনটি প্রকল্পের মধ্যে বুয়েটের অক্সিজেট বিজয়ী হয়।
চূড়ান্ত পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলস ও বাংলাদেশের বুয়েট অংশ নেয়।
বিচারকদের মতামতের ভিত্তিতে ২২ নভেম্বর বুয়েটের অক্সিজেটকে এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করল।
অক্সিজেট বিদ্যুৎ ছাড়াই চলে। দেশের হাসপাতালগুলোর সাধারণ বেডে রোগীকে প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ ১৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া যায়। এর বেশি অক্সিজেনের দরকার হলে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা লাগে কিংবা রোগীকে আইসিইউতে নিতে হয়। কিন্তু বিশেষ ওই ক্যানুলা ও আইসিইউ—দুটিরই সংকটে অনেক রোগীকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয় না। এ সংকটের সমাধান দিতে পারে অক্সিজেট।