ডেস্ক নিউজ
ভারত থেকে চাল আমদানির খবরে দেশীয় চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি এক থেকে দুই টাকা কমেছে। তবে এখন পর্যন্ত খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। গত সপ্তাহে ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ১১৩ টন চাল এসেছে। দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে বেড়েছে ডাল, ডিম ও মুরগির দাম। কমেছে পেঁয়াজের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য পণ্যের দাম। শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম এক থেকে দুই টাকা কমে বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকায়, মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, পাইজাম প্রতি কেজি ৪৮ টাকায়, মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকায়। নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। তবে পোলাওয়ের চাল আগের দামেই ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর-১১ নম্বর বাজারের চাল বিক্রেতা মো. কামাল যায়যায়দিনকে বলেন, পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি কমেছে এক থেকে দুই টাকা। চালের দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতীয় চাল বাজারে আসবে বলে চালের দাম কমতে শুরু করছে।
চাল আমদানিকারক ললিত কেশেরা বলেন, চালের আমদানির শুল্ক কমানোয় বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। পাইপলাইনে প্রচুর চালবোঝাই ট্রাক রয়েছে। এসব চাল দেশে প্রবেশ করলে চালের দাম কমে আসবে। বন্দর দিয়ে প্রতি টন চাল ৪৫০ মার্কিন ডলার মূল্যে ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রম্নপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, সরকারের বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে চাল আমদানির লক্ষ্যে এর মধ্যেই তারা এলসি (ঋণপত্র) খুলেছেন। ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ৬০ হাজার টনের মতো চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা আশা করছেন, ভারতে চালের দাম কমে আসবে। এতে দেশের বাজারেও দাম কমবে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, চালের আমদানি শুল্ক বেশি থাকায় গত ৩০ এপ্রিল থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমানোর
ফলে দীর্ঘ তিন মাস ২৩ দিন পর চাল আমদানি শুরু হয়েছে। বন্দর দিয়ে পুনরায় চাল আমদানির ফলে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বাড়বে, তেমনি বন্দরের দৈনন্দিন আয় বাড়বে। এসব চাল বাজারজাত হলে চালের দাম কমে আসবে।
স্থিতিশীল সবজির বাজার :রাজধানীর বাজারে বেশির ভাগ সবজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি (গোল) বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান টমেটো ১০০ টাকা, সিম ১২০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা। চালকুমড়া প্রতি পিস ৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢঁ্যাড়স ৪০ টাকা, লতি ৮০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০ থেকে ৬০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। পাঁচ টাকা দাম কমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বাজারে আগের দামে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কাঁচাকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৬০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।
এছাড়া শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুনের কেজি ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, আদার দাম ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি হলুদ ১৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডালের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। গত সপ্তাহে ইন্ডিয়ান ডালের প্রতি কেজি দাম ছিল ৮০ টাকা।
চিনি, ডিম, মুরগি :রাজধানীর বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিনির খুচরা মূল্য ছিল ৭৮ থেকে ৭৯ টাকা। এছাড়া প্যাকেট চিনি ২ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।
বাজারে পাঁচ টাকা দাম বেড়ে প্রতি ডজন লাল ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের দাম ২০ টাকা বেড়ে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা।
অন্যদিকে, মুরগির দাম কেজিপ্রতিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতি কেজি সোনালি (কক) মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ থেকে ২৩৫ টাকায়। লেয়ার মুরগি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ থেকে ২৩৫ টাকা।
মিরপুর-১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, বাজারে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। মুরগির দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।