সরকার আরও ১০০টি কারিগরি স্কুল ও কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশ-বিদেশে শ্রমবাজারে চাকরির সুযোগ বাড়াতে যুব সমাজকে দক্ষ করতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে দেশের ১০০টি উপজেলায় বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণে অবকাঠামোও স্থাপন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এ উদ্যোগ নিয়েছে। এর জন্য ‘১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি একাধিকবার সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব সংশোধনীতে ব্যয়ও বেড়েছে। ২০১৪ সালে ৯২৪ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নেয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ ধার্য করে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০১৮ এবং ২০২১ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সর্বশেষ ১০ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সংশোধিত প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (আরএডিপি) চলমান প্রকল্প তালিকায় ৪৮৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৪র্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ উন্নত হবে। আরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে এবং প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটবে। যা সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রকল্পের আওতায় নির্দিষ্ট উপজেলাগুলোয় ১৬২ দশমিক ১২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে এবং এসব জমির উন্নয়ন করা হবে। কেনা হবে প্রকৌশল সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র। ৬ দশমিক ৮৫ লাখ বর্গমিটার একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ ভবন ও সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
এসব স্কুল ও কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে ৪৯ হাজার ৬৫০ রানিং মিটার সীমানা প্রাচীর করা হবে, ১৯ হাজার ১৫০ রানিং মিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ১০০টি স্কুল কলেজের জন্য ১০০টি জলাধারসহ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব, অনাবাসিক ভবন, ভূমি অধিগ্রহণ, প্রকৌশল ও অন্যান্য সরঞ্জাম, সেমিনার কনফারেন্স, আউটসোর্সিংসহ কতিপয় খাতে ব্যয় বৃদ্ধি, যানবাহন ক্রয়, পরামর্শক ব্যয়, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ, বইপত্র-সাময়িকী ইত্যাদি খাতে ব্যয় কমানো এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ৩ বছর বাড়ানোর জন্যই প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. এম শামসুল আলম জানিয়েছেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ উন্নত হবে। অধিক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে। প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ বিদেশে রফতানির মাধ্যমে এতে অধিক বৈদেশিক মুদ্রাও আসবে।