ডেস্ক নিউজ
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আবাসন সুবিধার আওতায় আনার জন্য সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০ জুন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মধ্যে ৫৩ হাজার ৩৪০টি বাড়ি বিতরণ উদ্বোধন করবেন।
বুধবার মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার টেওটা ইউনিয়নের আবাসনের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বাড়িগুলোর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের অধীনে আগামী ২০ জুন তাদের কাছে বাড়িগুলো হস্তান্তর করবেন। তিনি বলেন, টেওটা ইউনিয়নে মোট ২৪টি পরিবার বাড়ি পাবে।
এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিটি বাড়ি দুই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে উল্লেখ করে মাহবুব বলেন, নতুন বাড়িতে তাদের জিনিসপত্র স্থানান্তরের জন্য সমতল জমির প্রতি বাড়ির মালিক পাঁচ হাজার টাকা এবং পাহাড়ি ও হাওর অঞ্চলে সাত হাজার টাকা করে পাবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৩ জানুয়ারি প্রকল্পের প্রথম ধাপে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর কাছে ৬৯ হাজার ৯০৪টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন।
প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, প্রথম ধাপের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পটি মুজিববর্ষে ২১ জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ করে তিন হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করেছে। তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প ২০২০ সালে আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা তৈরি করে, যার মধ্যে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবার রয়েছে যাদের এক থেকে ১০ শতাংশ ভূমি আছে, কিন্তু আবাসনের ব্যবস্থা নেই।
মো. মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে আশ্রয়ণের মাধ্যমে প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখ ২০ হাজার ৫৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের (জুলাই ২০১০-জুন ২০২২) আওতায় চার হাজার ৮৪০.২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন ও বাস্তচ্যুত পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্য রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে সরকার কক্সবাজারের খুরুশকুলে ৬০০ পরিবারের জন্য ২০টি পাঁচতলা ভবনও নির্মাণ করেছে যারা জলবায়ু উদ্বাস্তু।
মাহবুব হোসেন বলেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বিশদ প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) এর মাধ্যমে আরও ১১৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছে। তিনি জানান, পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর সদস্যদেরকে আয়-বৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত রাখতে তারা বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়ন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য দারিদ্র্য দূরীকরণে ভবিষ্যতে প্রকল্পের কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত করা হবে।