ডেস্ক নিউজ
২০২০ সালের এপ্রিলে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ব্যাংক ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ আর আমানতে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদহার ঠিক করে দেয়া হয়। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার বেঁধে দেয়া হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত ও ঋণের সুদহার তুলনামূলক বেশি থাকে সব সময়ই। এই বিবেচনায় আমানতের ক্ষেত্রে এক শতাংশ, আর ঋণের ক্ষেত্রে দুই শতাংশ বাড়তি সুদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
ব্যাংকের পাশাপাশি এবার ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে। আর আমানতের বিপরীতে সুদ দেয়া যাবে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ।
এই সিদ্ধান্ত আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার আগের আমানতের ক্ষেত্রে সুদের হার ওই আমানতের বর্তমান মেয়াদ পূর্তির পর নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
২০২০ সালের এপ্রিলে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ব্যাংক ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ আর আমানতে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদহার ঠিক করে দেয়া হয়। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার বেঁধে দেয়া হয়নি।
এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত ও ঋণের সুদহার তুলনামূলক বেশি থাকে সব সময়ই। এই বিবেচনায় আমানতের ক্ষেত্রে এক শতাংশ, আর ঋণের ক্ষেত্রে দুই শতাংশ বাড়তি সুদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো চলতিসহ সব ধরনের আমানত নিতে পারে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছয় মাসের কম মেয়াদি কোনো আমানত নিতে পারে না। আবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেকে আমানত রাখতে চান না। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অনেক বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়ার তথ্যও ফাঁস হয়েছে।
কোনো কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান আগের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এতে সাধারণ আমানতকারীদের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও এখন এসব প্রতিষ্ঠানে আগের মতো টাকা রাখতে চাইছে না।
আমানত টানতে অনেক প্রতিষ্ঠান ৮ থেকে ১২ শতাংশ সুদ দিতে চাইছে। আর ঋণ দিচ্ছে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সুদে।
এ অবস্থায় গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ ও আমানতে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদ সমন্বয় করতে হবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ফ্রেব্রুয়ারি শেষে ২৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতে গড় সুদ ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ঋণে ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এর মধ্যে আমানতে ৭ শতাংশ ও ঋণে ১১ শতাংশের ওপর গড় সুদ রয়েছে: ফনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড আমানতে সুদ ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, ঋণে ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ।
উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড আমানতে সুদ ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানির আমানতে সুদ ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ঋণে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
আভিভা ফাইন্যান্সের আমানতে সুদ ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, ঋণে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
লঙ্কা বাংলার আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। প্রাহম ফাইন্যান্সের আমানতে সুদ ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
বে-লিজিংয়ের আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, ঋণে ১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) আমানতে সুদ দিচ্ছে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।
ইউনিয়ন ক্যাপিটালে আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ঋণে ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেসের আমানতে সুদ ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ঋণে ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ।
ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ঋণে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
প্রিমিয়ার লিজিংয়ের আমানতে সুদ ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, ঋণে ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের আমানতে সুদ ৯ দশমিক ২০ শতাংশ, ঋণে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
ফার্স্ট ফাইন্যান্সের আমানতে গড় সুদ দিচ্ছে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। মাইডাসের আমানতে সুদ ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, ঋণে ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
আইআইডিএফসির আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। ফাস ফাইন্যান্স আমানতে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ সুদ দিচ্ছে।
ন্যাশনাল ফাইন্যান্স আমানতে সুদ ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ঋণে ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ।
হজ ফাইন্যান্স আমানতে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ সুদ দিচ্ছে।
মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ঋণে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
সিভিসি ফাইন্যান্সের আমানতে সুদ ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, ঋণে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
লঙ্কান এলিয়েন্সের ঋণে সুদ নিচ্ছে ১১ দশমিক ০২ শতাংশ।
স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের আমানতে সুদ ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।