ডেস্ক নিউজ
স্বাধীনতার মাত্র ৪৮ বছরের মাথায় আর্থ-সামাজিক খাতে দৃশ্যমান সাফল্যের জন্য সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে বাংলাদেশ। দৃঢ় রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সঠিক পরিকল্পনার কারণে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করার প্রচেষ্টায় দীর্ঘপথ এগিয়ে যাওয়ায় প্রশংসিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলও। এমনকি অতীতে বাংলাদেশকে শাসন-শোষণ করা পাকিস্তানও অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ বন্দনায় মেতেছে। জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে তারা মতবিরোধ দূর করে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার চিন্তা-ভাবনা করছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ইসলামাবাদ সাহিত্য সম্মেলন-২০১৯ অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন উপস্থিত সাহিত্যিকরাও।
সম্মেলনে উপস্থিত এক সাহিত্যিক বলেন, বাংলাদেশ এক সময় আমাদের ভাই ছিলো। তারা আজকে আমাদের চেয়ে বহুদূর এগিয়ে গেছে। তাদের অগ্রগতি বিবেচনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনের মূল কারণ হলো, সঠিক গণতান্ত্রিক চর্চা তথা উন্নয়ন চর্চা, যা পাকিস্তানে অনেকটাই অনুপস্থিত। আমাদের এখানে সেনাবাহিনী একটি বড় সমস্যা। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের পানি নিয়ে একটু ঝামেলা চললেও বাংলাদেশ কিন্তু এটি নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে না। তারা আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে চায়। ভারত যেহেতু শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র তাই তাদের সাথে সংঘর্ষে না গিয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কূটনৈতিক তৎপরতায় সকল সমস্যার সমাধান করতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান এবং নিঃসন্দেহে তারা আমাদের চেয়ে ভালো মুসলমান, কারণ তারা একে অপরের গলা কাটে না। পাকিস্তানে তো নারীকে বোরখা পরিয়ে ঘরে বসিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন, বাংলাদেশের নারীরা বোরখা পরে রাস্তায় সাইকেল চালায়, এমনকি পুরুষের পাশাপাশি কাজও করে।
এসময় ওই সাহিত্যিক কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, খেয়াল করলে দেখবেন- পাকিস্তানের ধাতব মুদ্রায় রাজা-বাদশা বা মসজিদের ছবি দেয়া আছে। অথচ বাংলাদেশের মুদ্রায় ছেলে ও মেয়ের পাশাপাশি বসে বই পড়ার ছবি রয়েছে। তারা কতটা সচেতন তা এটিই প্রমাণ করে। পাকিস্তানে অর্থ ব্যয় করা হয় আরাম-আয়েশের জন্য, অথচ বাংলাদেশ সরকার অর্থ ব্যয় করে দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য, শিশুদের লেখাপড়া করানোর পেছনে। পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বিস্তর ফারাক রয়েছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য আজকে বাংলাদেশ এশিয়ান টাইগার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অথচ পাকিস্তান আইএমএফ- এর কাছে ভিক্ষা চেয়ে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক। স্বাধীনতার পর অনেক কিছু করেছে পাকিস্তান, কিন্তু নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি বলে আমি মনে করি। স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তানের প্রতিটি সরকার উন্নয়নের চিন্তা বাদ দিয়ে ভারতকে বধ করা, আণবিক বোমা তৈরি করার পেছনেই বেশি সময় ব্যয় করেছে। আণবিক বোমা তৈরিও করা হয়েছে। কিন্তু তাতে পাকিস্তানের কতটুকু লাভ হয়েছে? সুতরাং পাকিস্তানের জন্য বাংলাদেশ অবশ্যই অনুকরণীয়- এটি স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা নেই।