ডেস্ক নিউজ
আল জাজিরার বাংলাদেশের সঙ্গে কেন এমন শত্রুতা? বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কারণেই রাজনৈতিকভাবে আল জাজিরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেয় শুরু থেকেই। মধ্যপ্রাচ্যের অনেকের মতো আল জাজিরাও বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশ নয়, মিসকিনের দেশ হিসেবে দেখতে চায়।
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে মুক্তি পেয়েছে আল জাজিরা প্রযোজিত সিনেমা ‘All the Prime Minister’s Men’. সিনেমাটি তৈরির প্রধান কুশীলব হলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দণ্ডিত ডেভিড বার্গম্যান, মাদকাসক্তির অপরাধে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে বহিষ্কৃত ক্যাডেট জুলকারনাইন সায়ের খান (সামি ছদ্মনামধারী) এবং অখ্যাত নেত্র নিউজ-এর প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল।
সিনেমায় নায়ক-নায়িকার প্রেম দেখানো হয়। বাস্তবে হয়তো তাদের প্রেমের সম্পর্ক নেই। কখনো আবার নায়ক-নায়িকার বিয়ে দেখানো হয়। এ বিয়ে কি সত্যি? বাস্তবে হয়তো তাদের স্ত্রী বা স্বামী রয়েছে। সিনেমায় দেখানো হয় মাফিয়া নেতা লেন-দেন নিয়ে কথা বলছেন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। আসলেই কি মাফিয়া নেতা পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন? অবশ্যই না। সিনেমার প্রয়োজনে এমন দৃশ্যপট, সেট সাজানো হয়। আল জাজিরাও তাদের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা তৈরিতে এমন দৃশ্যপট সাজিয়েছেন। একটি দৃশ্যপটে দেখা যায়, হারিস আহমেদ নামে একজন দাবি করছেন প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক আছে। বাংলাদেশের পুলিশ-ব়্যাব, এমনকি মন্ত্রীরাও তার কথায় চলেন৷ বুলেট কেনা থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর নানা কাজ হারিস আহমেদ নিয়ন্ত্রণ করেন। দৃশ্যের এক জায়গায় হারিস আহমেদ ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন৷ বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে হারিস আহমেদের ছবিসহ পলাতক অপরাধী হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। প্রশ্ন হলো, হারিস আহমেদ এত প্রভাবশালী একজন মানুষ তিনি ‘নাম পরিবর্তন করে’ পালিয়ে আছেন কেন?
বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, “কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে-কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন, ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে-কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।” সংবিধান ছাড়াও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে সরকার যেকোনো সময় বিনা শর্তে বা দণ্ডিত ব্যক্তি যা মেনে নেয় সেই শর্তে তার দণ্ড কার্যকরীকরণ স্থগিত রাখতে বা সম্পূর্ণ দণ্ড বা দণ্ডের অংশ বিশেষ মওকুফ করতে পারবেন।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাভোগরত ছিলেন।
বর্তমান সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারার ক্ষমতা বলে মানবিক কারণে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছেন। বেগম জিয়ার সঙ্গে বর্তমান সরকারের প্রীতির সম্পর্ক নয়, বরং এক ধরনের বৈরিতার সম্পর্ক। এরপরও বেগম জিয়া যদি দণ্ড স্থগিতের সুযোগ পান তাহলে আল জাজিরা যাকে প্রধানমন্ত্রীর লোক বলে দাবি করেছে সেই হারিস আহমেদ কেন এই সুযোগ না পেয়ে বছরের পর বছর বিদেশে পালিয়ে আছেন?
টেলিফোনে যে র্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা দেখানো হলো তার নাম, পরিচয় কী? কাদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর নানা কাজ হারিস আহমেদ নিয়ন্ত্রণ করেন? প্রধানমন্ত্রীর লোক হওয়া সত্ত্বেও হারিস আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিব্রতকর হয়, এমন বিষয় আল জাজিরার হাতে তুলে দেবেন কেন? তারপরও যদি ধরে নেই হারিস আহমেদের বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব কিংবা সশস্ত্র বাহিনীর কারো সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, তার দায় কি প্রধানমন্ত্রীর ওপর বর্তায়?
বাংলাদেশে যারা দুর্নীতি করে, অবৈধ ব্যবসা করে তারা কি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে করে? হারিস আহমেদ দাবি করলেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর লোক হয়ে গেলেন?
ওয়াজ মাহফিলে হাজার হাজার মানুষের সামনে এক বক্তা দাবি করেছেন, আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে একাধিকবার আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখা করতে আগ্রহী নন। এটি সত্য কি না যাচাই করতে ট্রাম্পের কাছে যাওয়ার দরকার নেই। সাধারণ বিবেক-বুদ্ধি ও যুক্তির প্রয়োগ করলেই অনুমান করা সম্ভব এর মধ্যে সত্যতা কতটুকু।
আরেক বক্তা বলেছেন, ২য় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হয়ে হিটলার তার সেনাবাহিনী নিয়ে মাটির নিচের জগতে চলে গিয়েছেন। এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ কি জরুরি? একজনের সঙ্গে ছবি তুললেই কি কেউ তার লোক হয়ে যায়?
ধরুন, আমি দেশের বাইরে যাচ্ছি, বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ লাউঞ্জে কিংবা বিমানে আমার পাশের সিটে অপরিচিত একজন নারী আছেন। এই ছবি তুলে কেউ যদি দাবি করে সুন্দরী নারী নিয়ে আমি বিদেশে ভ্রমণে যাচ্ছি, ওই নারী কি আমার লোক হয়ে গেল? অতীতে কারো সঙ্গে আমার জানা-শোনা, ওঠা-বসা ছিল, ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু সে খুনের অপরাধে দণ্ডিত হওয়ার পর তার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। তারপরও কী করে তিনি আমার লোক হবেন? আল জাজিরার All the Prime Minister’s Men শিরোনাম সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। তদুপরি, আল জাজিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কতটা ষড়যন্ত্র করতে পারে তার প্রমাণ মেলে যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নানা মিথ্যা প্রতিবেদন প্রচার করার ক্ষেত্রে।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল বলেও আল জাজিরা মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে। এমনকি জুরাইন কবরস্থানে রানা প্লাজা ধসে নিহতদের সারি সারি কবরকে দেখিয়ে প্রতিবেদন করেছে, এখানে হেফাজতের নিহত হাজার হাজার কর্মীকে কবর দেয়া হয়েছে।
একটা সংবাদমাধ্যম কতটা মিথ্যুক ও ষড়যন্ত্রী হলে এমন ভিত্তিহীন, বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করতে পারে? সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়া, উগ্র মতবাদ ও সহিংসতা উসকে দেয়া, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন এবং সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সৌদি আরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত, জর্দান, ইরাক, মিসর, আলজেরিয়া, মালয়েশিয়া, সুদান, লিবিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে আল জাজিরাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৮ সালে কাশ্মীরের ওপর তৈরি ডকুমেন্টারিতে ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের দেয়া বক্তব্য ডকুমেন্টারি থেকে এডিট করে বাদ দিয়ে প্রচার করায় ভারত সরকার আল জাজিরা নিষিদ্ধ করে।
এর আগে ২০১৫ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের মানচিত্র এডিট করে প্রচার করায় ৫ দিনের জন্য আল জাজিরার প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত সরকার। এ সময় আল জাজিরা তাদের ফাঁকা পর্দায়-
“As instructed by the Ministry of Information and Broadcasting, this channel will not be available from 00.01 hours on April 22 till 00.01 hours on April 27, 2015.” এটা দেখাতে বাধ্য হয়েছিলো।
মিসর সরকার মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের জন্য আল জাজিরার ৬ সাংবাদিককে কারাবন্দি করেছিল। মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশের কারণে আল জাজিরার বিবেকবান সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে আল জাজিরা ছেড়ে গিয়েছে। আল জাজিরার একের পর এক হলুদ সাংবদিকতায় বিরক্ত হয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এটি শুধুই একটি গণমাধ্যম, নাকি গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নে কোনো গোষ্ঠীর মুখপত্র হিসেবে কাজ করছে?
বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে নানা শঙ্কায় আছে সরকার। এ দেশের গৃহহীন মানুষদের জন্য ভাসানচরে তৈরি আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এ সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েক হাজার রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে স্থানান্তরিত হয়েছে। সরকারের এ প্রচেষ্টা ভণ্ডুল করতে আল জাজিরা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ শিরোনাম করেছে-
‘Bangladesh moves nearly 2,000 Rohingya refugees to remote island. Second group of 1,800 Rohingya refugees sent to Bhasan Char island amid concerns many of them have been coerced.
আল জাজিরার বাংলাদেশের সঙ্গে কেন এমন শত্রুতা? বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কারণেই রাজনৈতিকভাবে আল জাজিরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেয় শুরু থেকেই। মধ্যপ্রাচ্যের অনেকের মতো আল জাজিরাও বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশ নয়, মিসকিনের দেশ হিসেবে দেখতে চায়।
বাংলাদেশের রূপকথার উন্নয়নে আল জাজিরার জ্বলুনিটা তাই সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন, এটি আল জাজিরার জঙ্গিবাদতোষণ নীতির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক গণতন্ত্রের ঘাটতি, ব্যত্যয় ও বিচ্যুতি আছে অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক গণতন্ত্র তথা সবার জন্য সামাজিক কল্যাণ এবং উৎপাদন ও বণ্টনে সাধারণ মানুষের অংশীদারত্ব নিশ্চিতকরণের দায়িত্বপালনে সরকার বিস্ময়করভাবে সাফল্য অর্জন করেছে। ফলে, রাজনৈতিক গণতন্ত্রের ঘাটতি, ব্যত্যয় ও বিচ্যুতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে না সরকারবিরোধীরা।
বিরোধীদের রয়েছে ভয়ংকর রকম নেতৃত্বের দুর্বলতা। নেতৃত্বের দুর্বলতা থাকলে একটি রাজনৈতিক দলে কেমন বিপর্যয় হতে পারে তার বড় উদাহরণ এ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম দল ভারতীয় কংগ্রেস পার্টি। জেলের ভয়ে বিদেশে বসে দল চালিয়ে সফল হওযা যায় না। ৩য় বিশ্বের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জেল-জুলুমের সংস্কৃতি স্বাভাবিক ঘটনা।
মিয়ানমারে অং সান সু চি নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারেনি। উপরন্তু ১৫ বছর গৃহবন্দি ছিলেন। ছাড়া পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। মেয়াদ শেষে নির্বাচনে সু চি জয়লাভ করলেও সামরিক সরকার তাকে আবারও কারাবন্দি করেছে, সামরিক শাসন জারি করেছে। সু চি এত নীপিড়ন সয়েও নিজ দেশে বসে লড়াই করছেন। আমাদের দেশে বিরোধীরা রাজনৈতিক গণতন্ত্রের ঘাটতিপূরণের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার উৎখাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আল জাজিরা সেই ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়ন করতে ষড়যন্ত্রীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ‘All the Prime Minister’s Men’ সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভিডিওর সব তথ্যকে আমি অসত্য বলছি না। যা প্রমাণিত সত্য যেমন, হারিস আহমেদ, আনিস আহমেদ সেনাপ্রধানের ভাই ও তারা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। জোসেফ আহমেদ কারাবাসের পর রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়েছেন। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে যেভাবে টার্গেট করা হয়েছে তা সাংবাদিকতার নৈতিকতার পরিপন্থী। আল জাজিরার নাট্যচিত্র দেখে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে যারা উল্লসিত তাদের কাছে আমার দুটো প্রশ্ন। এক. ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঢাকায় স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু লিখিত এই দালিলিক সত্যকে অস্বীকার করে ২৭ মার্চ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণাপাঠকে ভিত্তি করে বিএনপি জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলছে, এটির প্রতিবাদ করেছেন? দুই. বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক ও রশিদ যুক্তরাজ্যে টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ও মামলার সাক্ষ্যে হত্যার পরিকল্পনায় জিয়ার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছেন। খুনিদের নিজ মুখে বলা এই দালিলিক সত্যকে আপনারা ষড়যন্ত্র বলেন কেন?
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে জানা যায়, আল জজিরার মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের বিরুদ্ধে সরকারের মামলা করার পরিকল্পনা আছে। আল জাজিরা যে অপরাধ করেছে তা দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে মামলাযোগ্য। মানহানির পাশাপাশি এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধও বটে। আমার পরামর্শ হচ্ছে অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দাঁতে দাঁত চেপে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। আন্তর্জাতিক নানা সমীকরণ বিশেষ করে কাতারে আমাদের যে বিরাট সংখ্যক অভিবাসী রয়েছেন তাদের কথা ও কাতার থেকে যে রেমিট্যান্স আসে সে কথা বিবেচনা করে মামলা না করে কাতার সরকার ও আল জাজিরার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদলিপি পাঠানো শ্রেয় হবে। মনে রাখতে হবে আল জাজিরা কাতারের শাসক রাজ পরিবারের মালিকানাধীন সংবাদ নেটওয়ার্ক।
সিনেমার উদ্দেশ্য দর্শককে বিনোদন দেয়া। আর আল জাজিরার উদ্দেশ্য বিনোদন নয়, ভয়ংকর উসকানি দেয়া। সরকার উৎখাতে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি করা। একটি সংবাদ মাধ্যমের অর্থের কাছে বিক্রি হওয়া বা কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করা সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকতার জন্য লজ্জাজনক।