নিউজ ডেস্ক:
বিএনপির সঙ্গে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বৈঠকের খবর বেশ পুরনো। ২০১৬ সালে ইসরায়েলি গোয়েন্দা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের পর বিষয়টি আরো স্পষ্ট ভাবে জনসম্মুখে আসে। এবার বেগম জিয়ার মুক্তি আদায়ে ইসরায়েলকে কাজে লাগাতে তৎপরতা শুরু করেছে বিএনপি। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বের করতে চাইছে বিএনপি। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে এমন তথ্যের বিষয়ে জানা গেছে।
বিএনপি ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক তেমন ভালো নয়। তবে ইসরাইলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ়। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ইসরাইলের শরণাপন্ন হচ্ছে বিএনপি। যদিও ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সকলেই জানে, ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অসংখ্য নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করেছে। শত সমালোচনার সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি। আর এ কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে যেকোন সন্ধি করতে প্রস্তুত রয়েছে বিএনপি।
এদিকে, চলতি সপ্তাহেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। হঠাৎ করে দিন-তারিখ ঠিক করে বেগম জিয়ার মুক্তি বিষয়ে মওদুদের এমন বক্তব্যে আন্তর্জাতিক জোর লবিংয়ের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজনীতি সচেতনরা।
বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, হাইকোর্টে এখন বেগম জিয়ার দুটি মামলা আছে। একটি হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, আরেকটি হলো জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। এই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের ডিভিশনে এ দুটি মামলায় জামিন চাওয়া হবে। আমরা আশা করি, যেহেতু এবার আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি, সেহেতু জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়া জামিন পাবেন, এতটুকু আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি।
তিনি আরো বলেন, যদি বেগম জিয়ার জামিন না হয় তাহলে চাপের মুখে পড়বে সরকার।
তবে মওদুদ কোন চাপের কথা বলেছেন সেটি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই বিষয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক শঙ্কা ও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি সম্ভবত ইসরায়েলের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে ভারতকে দিয়ে চাপ দিতে পারে। ইসরায়েল ও আন্তর্জাতিক লবিস্টদের গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই হয়তো মওদুদ কনফিডেন্স নিয়ে এমন কথা বলেছেন।
তবে বিষয়টিকে হাস্যকর বলে দাবি করে অন্য এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশ কারো কথা মতো চলে না। একজন চিহ্নিত অপরাধীকে শাস্তি দিতে বাংলাদেশকে কারো কাছে নতি স্বীকার করবে না।
তিনি আরো বলেন, তবে বিএনপির দৌড়-ঝাপ দেখে মনে হচ্ছে, তারা ক্ষমতায় আসার জন্য বাংলাদেশকে অন্য দেশের কাছে বিক্রি করে দিতেও প্রস্তুত রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। বিএনপির উদ্দেশ্যে শুধু একটাই কথা বলতে চাই ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যদি দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করতো তাহলে আজকে দলটির এই দুর্দশা ও পরনির্ভরশীলতা থাকতো না। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে পাকিস্তানের মতো জঙ্গি রাষ্ট্র ও দুর্নীতিবাজদের তোষামোদি করার কারণে আজকে বিএনপির এই করুণ পরিণতি হয়েছে।