ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণ একটি বাস্তবতা। এটি কোন স্বপ্ন নয় বরং একটি দৃশ্যমান অগ্রগতি। এ বাস্তবতাকে সকলের অংশীদারিত্বে উপভোগ্য করতে প্রয়োজন সহমত ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে সামিল হওয়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন ভূমি বাংলাদেশ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার অভীষ্ট লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন রূপকল্প-২০২১। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত রেখে জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণসহ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ জাতি গঠন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনে বর্তমান সরকার কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়েছে দেশবাসীকে। বহুবিধ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল এবং দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। ২০০৫-০৬ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে মোট ১ কোটি ৩৪ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং ২০০৫-০৬ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৯ লাখ কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু-মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২০০৫ সালে ৩৬ জন থেকে ২০১৭ সালে ৩১ জনে নেমে এসেছে এবং এক বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার ২০০৫ সালের ৪৮ জন হতে ২০১৭ সালে ২৪ জনে নেমে এসেছে।
নারীর ক্ষমতায়নের অনন্য প্রতীক বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ শিল্পখাত তৈরি পোশাকে ৯৩ শতাংশই নারী। বর্তমানে ১৪ হাজার নারী জনপ্রতিনিধি সারাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বে এবং স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে পৃথিবীর ১৪২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দশম।
বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৭০টি দেশে রফতানি হচ্ছে। চামড়া খাতে রফতানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন ও সংরক্ষণে অব্যাহতভাবে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেয়ায় এ খাতে প্রভূত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে; নির্মিত হয়েছে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, বিশ্বরোড-বিমানবন্দর সংযোগস্থল ফ্লাইওভার, জিল্লুর রহমান (মিরপুর হতে বিমানবন্দর সড়ক) ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, হাতিরঝিল প্রকল্প।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ-
(১) একটি বাড়ি একটি খামার, (২) ডিজিটাল বাংলাদেশ, (৩) নারীর ক্ষমতায়ন, (৪) সবার জন্য বিদ্যুত, (৫) কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ, (৬) আশ্রয়ণ প্রকল্প, (৭) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী, (৮) শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম, (৯) বিনিয়োগ বিকাশ ও (১০) পরিবেশ সুরক্ষা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত ও বাস্তবায়নাধীন উদ্যোগসমূহ বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।