নিউজ ডেস্ক
জোবাইদা ইসলাম মালিবাগের দেশ গার্মেন্টসের অপারেটর। গত বছর ডিসেম্বর মাসে শূন্যহাতে শরিয়তপুর থেকে ঢাকা এসে এই পদে ৫ হাজার ৩০০ টাকা বেতনে চাকরি নেন তিনি। এক বছর না ঘুরতেই বেতন বাড়ার সুসংবাদ দেয়া হয় তাকে। এখন তার ন্যূনতম বেতন ধার্য করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। নির্দিষ্ট সময়ের পর অভারটাইম করে জোবাইদার আরও প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে সে এই শিল্প খাতে নিজেকে একজন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তুলছে।
নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে এসে এদেশের অর্থনীতির চাকাকে ঘুরিয়ে দিয়েছে জোবাইদার মতো অনেকেই। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিরও একেকটি গল্প তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়নে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরকারী বিনিয়োগ। বিভিন্ন শিল্পে কর্মসংস্থান তৈরি করে দারিদ্র্য জয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
পোশাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে চামড়া, ওষুধ, প্লাস্টিক শিল্প ও কৃষি খাত। পোশাকসহ পণ্য খাতে মোট ৩৯ বিলিয়ন ডলার এবং সার্ভিস সেক্টরে আরও ৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি রয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আশা করা হচ্ছে, ২০৪১ সালে রফতানি ৬০ বিলিয়ন ডলার পৌঁছবে। আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারী চাকুরেদের জন্য অষ্টম পে-স্কেল ঘোষণা করেছে। এতে সরকারী চাকুরেদের ১০০ থেকে ১২০ ভাগ পর্যন্ত বেতন বেড়েছে। পোশাক শ্রমিকের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প খাতের মজুরি ও বেতন বাড়ানো হয়েছে। বাড়ি করার জন্য গৃহঋণসহ মিলছে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা। চাকুরেরা পাচ্ছেন উন্নতজীবন।
সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত দশ বছরে সব সামাজিক সূচক উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাথা পিছু আয় বেড়েছে ১৪৯ দশমিক ০৭ শতাংশ। গত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৭০৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। দারিদ্র্যতার হার ২০০৯ সালের ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০১৮ সালে হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অতি দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।
বর্তমান সরকার সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়িয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের কাছেও উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা লাভের সহায়তা হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচী চালু করেছে। বর্তমানে দেশের ৯০ হাজার প্রতিবন্ধী প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ৫০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তি পাচ্ছে।