ডেস্ক নিউজ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই’র আদলে এ্যাপ তৈরি করে অপরাধ দমন ও অপরাধী গ্রেফতারের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশের শীর্ষ ও কুখ্যাত একশ্রেণীর অপরাধী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ, চোরাচালান, অর্থ পাচার, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার, নারী ও শিশু পাচার, কার্গো ফ্লাইটে অবৈধ পণ্য পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে। এরা আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সদস্য হয়ে অপরাধী কর্মকা-ে জড়িত। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু পাচার হয়েছে। প্রতিবছর ২০ হাজার নারী ও শিশু ভারত, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে যায়। অপর এক হিসাবে দেখা যায়, ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে ৫০ হাজার নারী পাচার হয়ে গেছে। এ ছাড়া মানব পাচারের সঙ্গে মাদক পাচারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশে কোকেন, এমফিটামিনক, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনইথাইলামিনসহ মূল্যবান প্রাণঘাতী মাদক উৎপন্ন হয় না। অথচ এই ধরনের মূল্যবান ও প্রাণঘাতী মাদকের চালান আটক হচ্ছে বাংলাদেশে। আটক করা মাদকের চালানগুলো মিয়ানমার, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে। মাদকের চালানগুলোর গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে। মূল্যবান ও প্রাণঘাতী মাদক পাচারের ট্রানজিট রুট হিসেবে গড়ে উঠছে বাংলাদেশ। কোটি কোটি টাকার মাদক পাচারের জন্য ট্রানজিট রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাফিয়া ডন চক্র। বাংলাদেশে গত ৫ বছরে প্রায় অর্ধশতাধিক কোকেন, এমফিটামিনক, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনইথাইলামিনসহ মূল্যবান ও প্রাণঘাতী বড় ধরনের মাদকের চালান আটক করা হয়েছে। আটক করা মাদকের চালানের মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা। আকাশ পথে ও নদী পথে এসব মাদকের চোরাচালান আসে বাংলাদেশে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করেছে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী মাফিয়া ডন ও গডফাদার চক্র। আটক করা মাদকের চালানের সঙ্গে যারা জড়িত সেই আন্তর্জাতিক মাফিয়া ডন বা গডফাদার চক্র ধরা পড়ছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এ্যাপ হ্যাক করে লাখ লাখ এনক্রিপ্টেড মেসেজ উদ্ধার করার মাধ্যমে অপরাধীদের গ্রেফতার করে থাকে বৈশ্বিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। বিশ্বের ১৮টি দেশ থেকে এদের শনাক্ত করা হয় এ্যানম নামের একটি এ্যাপের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশের শত শত অপরাধী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থেকে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে এমন অভিযোগ পাওয়ার পরও দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সম্ভব হচ্ছে না। এফবিআইর তৈরি এ্যাপ প্রক্রিয়ায় অভিযান পরিচালনা করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো অপরাধ দমন ও অপরাধী ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই এই ধরনের এ্যাপ তৈরি করে অপরাধ দমনের বিষয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) প্রকাশনা ‘ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক’ এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (আইএনসিবি) বার্ষিক প্রতিবেদনে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মাদক পাচারের ট্রানজিট দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও মিয়ানমারের রুট ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশকে রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী ও মাফিয়া চক্র। সিআইএ এর ‘ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্ট বুক’ অনুযায়ী ভৌগোলিক সীমারেখার কারণে অবৈধ সীমান্ত বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে মাদক উৎপাদনকারী দেশগুলোর মাদক ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে মাদক পাঠায়। আইএনসিবির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হেরোইন পাচারের জন্য বাংলাদেশকে গুরুত্ব¡পূর্ণ ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এ ছাড়া জঙ্গীবাদের মধ্যে যারা গোপনে বাংলাদেশ থেকে সিরিয়া-ইরাকে গিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস-আইএসের হয়ে যুদ্ধ করেছে তারা দেশে এলেই গ্রেফতার করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। জাল টাকা তৈরি, পাচার চক্রের সদস্যরাও আছে যারা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত। এসব অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করাটা খুবই কঠিন ও শক্ত কাজ। এ জন্য প্রায়শ বিশ্বের বিভিন্œ দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। কিন্তু খুব বেশি একটা ভাল ফল বয়ে আনছে না। এখন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইর তৈরি এ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা গেলে বিদেশে অবস্থান করে দেশের ভেতরে অপরাধ করার প্রবণতা কমে যাবে।
এফবিআইর তৈরি এ্যাপের মাধ্যমে গত তিন বছরে এফবিআই’র তৈরি একটি অনলাইন এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে কয়েকশ’ অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্বের যে কোন দেশেই অপরাধীরা পালিয়ে থাকুক না কেন এফবিআইর তৈরি এ্যাপ ব্যবহার প্রক্রিয়ায় অভিযান পরিচালনা করে নিজ দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সম্ভব হওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই ধরনের এ্যাপ তৈরি করে বিদেশে ফাঁদ পেতে অপরাধী ধরার বিষয়ে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এফবিআইর তৈরি এ্যাপের মাধ্যমে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই গ্রেফতার করা হয়েছে ২২৪ জনকে। পাশের দেশ নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, তারা আটক করেছে ৩৫ জনকে। ইউরোপে সুইডেনে গ্রেফতার হয়েছে ৭৫ জন আর জার্মানিতে ৬০ জন। তারা মেসেজিং এ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে বহু বছর ধরেই অপরাধ পরিচালনা করে আসছিল। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই এবং অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ একত্রে এই অপারেশনের পরিকল্পনা করে। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, এই অপারেশন সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী পদক্ষেপ। শুধু অস্ট্রেলিয়ার জন্যেই নয়, এই পদক্ষেপ পুরো বিশ্বে কাঁপুনি সৃষ্টি করবে।
য্ক্তুরাষ্ট্রের এফবিআইর তৈরি এই এ্যাপটি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চক্রকে অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ১৮টি দেশ থেকে আটক করা হয়েছে কয়েকশ’ অপরাধী। এফবিআইর তৈরি এ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যে কোন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতার করতে ইতোমধ্যেই যুক্ত হয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ। সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এ্যাপ হ্যাক করে লাখ লাখ এনক্রিপ্টেড মেসেজ উদ্ধার করেছে বৈশ্বিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। সেই মেসেজের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে শত শত সন্ত্রাসীকে। বিশ্বের অন্তত ১৮ দেশে এই সন্ত্রাসীরা সক্রিয় ছিল। অভিযান যৌথভাবে পরিচালনা করে অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী। তারা অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় বৈশ্বিক মাদক চোরাচালান চক্রকে আটকে সক্ষম হয়েছে। এতে গ্রেফতার হয়েছে ৮ শতাধিক সন্ত্রাসী। জব্দ করা হয়েছে ১৪৮ মিলিয়ন ডলারের অর্থ। এছাড়া কয়েক টন মাদকও জব্দ করা হয়েছে। নিউল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধের ওপর নজর রাখতে এনক্রিপ্টেড বার্তা পড়া সম্ভব হয়। এছাড়া এ্যানম এ্যাপটি ব্যবহার করে অপরাধীদের অবস্থান ও তাদের যে কোন ধরনের ডিজিটাল যোগাযোগের সংকেত তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন আয়রন সাইড’। কর্মকর্তারা বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ এবং আমেরিকার ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এই এ্যাপটি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চক্রকে অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ১৮টি দেশ থেকে আটক করেছে। এ্যাপটি ব্যবহার করে সাঁড়াশি অভিযানের খবর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডই প্রথম প্রকাশ করেছে। এই এ্যাপটির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অপরাধ দমন ও অপরাধী গ্রেফতারের খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর অন্যান্য দেশের পক্ষ থেকেও প্রতিক্রিয়া জানানো হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অপরাধ দমন ও অপরাধী গ্রেফতারের ইতিবাচক প্রক্রিয়ার খবরে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উৎসাহিত করেছে বলে জানা গেছে।
২০১৮ সাল থেকে সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ্বজুড়ে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত এমন কয়েকশ’ দুষ্কৃতকারীকে আটক করেছে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ ও এফবিআই। ১৮টি দেশ থেকে এদের শনাক্ত করা হয় এ্যানম নামের একটি এ্যাপের মাধ্যমে। এদের বেশিরভাগেরই অবস্থান ছিল অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে। আটককৃত সবাই কোন না কোনভাবে মাদক চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিল। এ্যানম নামের একটি গোপনীয় এ্যাপের মাধ্যমে অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়। এছাড়া এর মাধ্যমে অপরাধীদের যে কোন ধরনের ডিজিটাল যোগাযোগের সংকেত সঠিক সময়ে পাওয়া যায়। ফলে কমানো গেছে মাদক চোরাচালানসহ অনেক সংঘবদ্ধ অপরাধ। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশও ব্যবহার করছে এই এ্যাপটি। ফলে দেশটি থেকে কমেছে গোলাগুলির মতো অপরাধ। এ্যাপটি ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ আটক করতে পেরেছে অন্তত দুইশ’ অপরাধীকে। উদ্ধার করা হয়েছে ৩ হাজার কেজি মাদক। অস্ট্রেলিয়ায় অপরাধ দমনের সাফল্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এই ধরনের এ্যাপের মাধ্যমে অন্যান্য দেশে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের গ্রেফতারের বিষয়ে আগ্রহী ও উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারপোলের ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট টাস্কফোর্সের (আইবিএমটিএফ) পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ফিলিপিন্সে ইন্টারপোলের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ফিলিপিন্সে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রড্রিগো দুতের্তে ক্ষমতা গ্রহণের পর মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এরপর আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান, মানবপাচারসহ নানা অভিযোগে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার এবং ফিলিপিন্সে অভিযান চালায় ইন্টারপোল। ওই তিন দেশে অভিযানকালে পুলিশ এবং ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ২১ লাখের বেশি ডাটা সংগ্রহ করে ইন্টারপোল। এসব ডাটা যাচাই করে ১৪৮টি গুরুত্বপূর্ণ হুমকি শনাক্ত করা হয়, যার মধ্যে ইন্টারপোল ঘোষিত ৪৯ জন আন্তর্জাতিক মোস্ট ওয়ানটেড অপরাধীর তথ্যও ছিল।