নিউজ ডেস্ক:
ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল।
রোববার রাজধানীর শাহবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরে তাকে বিধি অনুযায়ী সোনাগাজী থানার সাব-ইনস্পেক্টর আনোয়ার হোসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আনোয়ার হোসেনই সোমবার দুপুরে মোয়াজ্জেমকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে সিএমএম আদালতে হাজির করেন।
সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় তাকে বহনকারী গাড়িটি শাহবাগ থানা থেকে রওনা হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেয়া হয়।
সেখান থেকে তাকে দুপুর ২টার কিছু পরে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে, গত ১৭ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
এরপর থেকেই পলাতক ছিলেন সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম।
মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানির অভিযোগের জবানবন্দী ইন্টারনেটে ছড়ানোর বিষয়ে পিবিআইয়ের করা তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন গত ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
গত মার্চ মাসে নুসরাত তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করার পর তার তদন্তে তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম থানায় ডেকে নিয়ে এই মাদ্রাসাছাত্রীর জবানবন্দী নিয়েছিলেন।
এর কয়েক দিনের মাথায় নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে তা নিয়ে সারাদেশে আলোচনার মধ্যে ওই জবানবন্দীর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যুর পর গত ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এরপর ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন ওই অভিযোগ তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। এরপর পিবিআই যে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়, সেখানে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়।
পিবিআইর এই প্রতিবেদন সাইবার ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হলে গত ২৭ মে ট্রাইব্যুনালের বিচারক পুলিশ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
ওই সময় ওসি মোয়াজ্জেম ওএসডি হিসেবে রংপুরে কর্মরত ছিলেন এবং তার বাড়ি ছিল ঝিনাইদহে। কিন্তু আইনজীবী মামলায় তার ঠিকানা ফেনীর সোনাগাজী উল্লেখ করায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল হতে এই অতিরিক্ত সময় লেগেছে। সূত্র: channelionline